আবারও সরকার গঠনে ব্যর্থ ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু
Advertisements

ইসরাইলের জনগণ আবারো বিক্ষোভ প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করেছে।

নেতানিয়াহুর মন্ত্রীসভা গঠনের পর ১০ মাস পেরিয়ে গেছে। এই ১০ মাস ধরে নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবি জানিয়ে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ করে আসছে। কিন্তু নেতানিয়াহু পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবাদী জনতাকে দমন করার নীতি গ্রহণ করেছে। নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার উদ্যোগ যাতে বিচার ব্যবস্থার ক্ষমতা কমিয়ে আনা যায় এবং মন্ত্রীসভার বিচারিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়। কিন্তু নেতানিয়াহুর বিরোধী দল ও জনগণ মনে করে এই পরিকল্পনা নেতানিয়াহুর একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। গত ৭ অক্টোবর হামাসের আল-আকসা তুফান অভিযানের পর নেতানিয়াহু বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। কিন্তু দুই সপ্তাহ পর ইসরাইলের হাজার হাজার মানুষ আবারো রাস্তায় নেমে এসে নেতানিয়াহু সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছে।

তবে এবার নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবির প্রধান কারণ হচ্ছে, হামাস যোদ্ধাদের হাতে আটক ইসরাইলি বন্দীদের অবস্থার প্রতি তার অবজ্ঞা। তাদের অভিযোগ গাজার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমণ অব্যাহত রেখে নেতানিয়াহু ইসরাইলি বন্দীদের মুক্ত করার কোনো চেষ্টা করছে না। এ ধারণাও করা হচ্ছে, বন্দীমুক্তির বিষয়টি নেতানিয়াহুর কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে না। এমনকি নেতানিয়াহু হামাসের কাছে আটক ইসরাইলি বন্দীদের জীবনের বিনিময়ে হলেও গাজার বিরুদ্ধে স্থল অভিযান চালাবে ।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জনগণের বিক্ষোভের বিষয়টি ছাড়াও জনমত জরিপেও দেখা গেছে তার পদত্যাগের দাবি বেশ জোরালো। ইসরাইলি দৈনিক ‘জেরুজালেম পোস্ট’ জানিয়েছে, একটি জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ইসরাইলি নাগরিক অর্থাৎ ৫৬ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করে যে ফিলিস্তিনি জনগণ এবং প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাথে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পর নেতানিয়াহুর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। প্রকাশিত জরিপ অনুসারে, গাজা যুদ্ধের মধ্যেও ইসরাইলি নাগরিকদের মাত্র ২৮ শতাংশ নেতানিয়াহুকে সমর্থন করে। জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদনে আরো এসেছে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে চারজন ইসরায়েলি মনে করে আল-আকসা ঝড় মোকাবেলায় নেতানিয়াহু এবং তার জোট মন্ত্রীসভার ব্যর্থতার ফুটে উঠেছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জনগণের বিক্ষোভ এবং জনমত জরিপের ফলাফল থেকে বোঝা যায়, গাজায় ব্যাপক গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েও নেতানিয়াহু তার পতনের রাস্তা তো আটকাতে পারেনি বরং গাজা যুদ্ধে নেতানিয়াহুর মন্ত্রীসভার কর্মকাণ্ড তার পদত্যাগের দাবিকে আরো জোরদার করেছে। নেতানিয়াহু ভেবেছিলেন যে তিনি ফিলিস্তিনিদের সাথে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ শুরু এবং নারী ও শিশুহত্যা করে তেলআবিবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবেন, কিন্তু এখন এই ধারণাটিও উল্টে গেছে। নেতানিয়াহু যদি হামাসের হাতে বন্দী কমপক্ষে ২১০ ইসরাইলিকে মুক্ত করার চেষ্টা না করেন তবে তিনি এবং তার মন্ত্রীসভার নিশ্চিতভাবে পতন ঘটবে।

Advertisements