ভারত প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানের তালেবান নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ভারতের ‘তিনটি নিরাপত্তা সূত্রের’ বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, দেশটির একাধিক নিরাপত্তা সংস্থা তালেবানের উপ প্রধান ও প্রধান আলোচক মোল্লা আব্দুলগনি বারাদারসহ কয়েকজন তালেবান নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
মোল্লা আব্দুলগনি বারাদার তালেবানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং তিনি কয়েক বছর পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন।
পত্রিকাটি জানিয়েছে, ভারতের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এই আলোচনার গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ করছেন এবং তারা তালেবানের সেইসব নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন যারা ‘জাতীয়বাদী’ হিসেবে পরিচিত এবং ‘বিদেশি প্রভাবমুক্ত’।
ভারত সরকারের এ উদ্যোগকে আফগান তালেবানের ব্যাপারে নয়াদিল্লির নীতিতে ‘মৌলিক পরিবর্তন’ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গেটওয়ে হাউজের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক সামির প্যাটেল বলেছেন, ভারত আফগানিস্তানে নিজের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। বিদেশি সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগ করার পর দেশটিতে আবার গৃহযুদ্ধ দেখা দিলে কিংবা তালেবান ক্ষমতায় আসলে যাতে পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে রাখা যায় সে লক্ষ্যে এ কাজ করছে নয়াদিল্লি।
ভারতের একটি নিরাপত্তা সূত্র বলেছে, কয়েক মাস ধরে দুই পক্ষের মধ্যে যোগাযোগের যে চেষ্টা চলছে তা এখনও ‘প্রাথমিক পর্যায়ে’ রয়েছে। দু’পক্ষের মধ্যে একাধিকবার বার্তা আদান-প্রদান করা হলেও এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি।
আরেকটি নিরাপত্তা সূত্র হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছে, হাক্কানি নেটওয়ার্ক বা তালেবানের কোয়েটা শাখাকে এই যোগাযোগের আওতায় আনা হয়নি; কারণ তারা ‘পাকিস্তানের ক্রীড়নক’। এই সূত্রটির মতে, তালেবান নেতৃত্ব এখন একথা উপলব্ধি করেছে যে, আফগানিস্তানের উন্নয়নে ভারতের অন্তর্ভুক্তি জরুরি।
আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে বড় অঙ্কের অর্থসাহায্য দিয়েছে ভারত। গত দুই দশকে কাবুলকে ৩০০ কোটি ডলার সাহায্য করেছে নয়াদিল্লি। ভারত সব সময় আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন সরকার ও গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছে এবং তালেবানের আবার ক্ষমতায় আসার বিরোধিতা করেছে। আল-কায়েদা নেটওয়ার্কের সঙ্গে তালেবানের সম্ভাব্য গোপন যোগাযোগ নিয়ে সব সময় চিন্তিত ছিল নয়াদিল্লি।
পার্সটুডে