নুরদের গ্রেফতার
Advertisements

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশনে বসেছেন নুরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা সেই ঢাবি শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেন তিনি। এ সময় ছাত্রলীগের অন্তত বিশজন নেত্রী তার সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে এখানে অবস্থান নেন।

তারা হলেন, কুয়েত মৈত্রী হল ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদা পারভীন, ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্মআহ্বায়ক জেরিন তাসনি পূর্ণি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ফারজানা নিপা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বেনজির হেসেন নিশি।

এছাড়াও ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন নেতাকর্মীও একাত্মতা জানিয়ে অবস্থান নেন।

ধর্ষণের শিকার ঢাবি ছাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে ধর্ষণ একটা মহামারী আকার ধারণ করেছে। আমিও এটির একজন ভুক্তভোগী। এর আগে লালবাগ কোতয়ালী থানায় মামলা করেছি। আমার এই আমরণ অনশন কর্মসূচি মূলত মামলায় এখন পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেফারের জন্য আজকে এই আমরণ অনশন শুরু করেছি।

তিনি আরো বলেন, লালবাগ কোতয়ালী থানায় মামলা করেছি তদন্তের স্বার্থে একাধিকবার আমি থানায় যোগাযোগ করেছি। থানা থেকে বলা হচ্ছে, আমরা আসামিকে ধরার চেষ্টা করছি৷ আমরা নেটওয়ার্কে জাল বিছিয়ে দিয়েছি কিন্তু আসামিরা টেকনলোজিতে এক্সপার্ট, তারা কোনো ডিভাইস ইউজ করছে না। যার কারণে তারা ধরতে পারছে না।

তিনি বলেন, এরপর আমি আদালতে দুইবার আবেদন করেছি। আবেদনে বলা হয়েছে, এটি একটি জামিনঅযোগ্য অপরাধ, এজন্য আদালতের নির্দেশনার কোনো প্রয়োজন নেই। পুলিশ চাইলে আসামিকে যেকোনো সময় গ্রেফতার করতে পারে৷

লালবাগ থানার তদন্ত প্রতিবেদন ৭ অক্টোবর দেয়ার কথা ছিল সেটা ২৭ অক্টোবর করা হয়। আমার মামলা দায়েরের পর সারা দেশে কিছু মামলা হয়েছে। সেসব মামলায় আসামি গ্রেফতার হয়েছে।
আমার মামলা করার আজকে ১৭দিন। এত দিন পরেও কেন গ্রেফতার হচ্ছে না তার কারণ জানা নেই। আমার মনে হয় পুলিশ প্রভাবিত। আর আসামিরা তো প্রভাবশালী বটেই, কোনো এক অজ্ঞাত কারণে বা কোনো অদৃশ্য শক্তির বলেই আসামি গ্রেফতার হচ্ছে না।

আসামিদের গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আসামিরা গ্রেফতার না হচ্ছে ততক্ষণ এখানে অবস্থান করব এবং প্রয়োজনে আমরণ অনশন করব।

এর আগে ২০ সেপ্টেম্বর রাতে রাতে লালবাগ থানায় ধর্ষণ ও এতে সহযোগিতা করার অভিযোগ এনে ছাত্র অধিকার পরিষদের (সাময়িককভাবে অব্যাহতি প্রাপ্ত) আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, নাজমুল হাসান, নুরুল হক নুর, মো. সাইফুল ইসলাম, নাজমুল হুদা ও আবদুল্লাহ হিল বাকির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান আল মামুনকে। আর নুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়।

এর পর ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ তার ৬ সহযোগীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অপহরণ, ধর্ষণে সহযোগিতা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চরিত্রহননের অভিযোগে শাহবাগ থানায় সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করে সেই ঢাবি ছাত্রী।

ঢাবি ছাত্রীকে সমর্থন জানিয়ে তিলোত্তমা শিকদার বলেন, ভুক্তভোগী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী। সে অনশন করছে তাই সাহস যোগানোর জন্য আমরা তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। অপরাধীরা গ্রেফতার না হওয়া তার পাশে থাকব।

Advertisements