পুরোদস্তুর পর্যবেক্ষক টিম না পাঠালেও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সহিংস ঘটনা মূল্যায়নে ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ টিম পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পুরোটা সময় তারা ঢাকা থাকছেন। কমপক্ষে ছয় থেকে সর্বোচ্চ আট সপ্তাহ ওই মার্কিন মিশন বাংলাদেশে থাকবে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দুই গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই)।
গত ২০শে নভেম্বর নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে চিঠিটি পাঠানো হয়। ইসিতে পাঠানো চিঠিতে এনডিআই ও আইআরআই জানিয়েছে, বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে চারজন বিশেষজ্ঞ এবং একজন সমন্বয়কারী পাঠানো হবে। তারা বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ কাজ করবেন। তারা নির্বাচনের সপ্তাহ দুয়েক আগে ঢাকা পৌঁছাবেন। বিশেষজ্ঞ মিশনের কাজ হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতার জন্য কারা দায়ী এবং এর প্রভাব মূল্যায়ন করা। এই বিশেষজ্ঞরা নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সহিংসতার ঘটনা মূল্যায়ন করবেন।
বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতা, কোনো রাজনৈতিক দলের অন্তর্দলীয় কোন্দলের কারণে সহিংসতা, নারী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে সহিংসতা, অনলাইনে হয়রানি ও হুমকি ইত্যাদি বিষয় তারা খতিয়ে দেখবেন। এসব পরিস্থিতিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকাও মূল্যায়ন করবেন তারা।
এনডিআইয়ের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় কর্মসূচির পরিচালক জেমি স্পাইকারম্যান এবং আইআরআইয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক স্টিফেন চিমারের যৌথ স্বাক্ষরে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বিশেষজ্ঞ মিশনের কাজ হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতার জন্য কারা দায়ী এবং এর প্রভাব মূল্যায়ন করা।
ভবিষ্যতে নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা কমাতে ওই মিশন প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে। এনডিআই ও আইআরআইয়ের বিশেষজ্ঞরা তাদের মূল্যায়ন জনসমক্ষে প্রকাশের পাশাপাশি ইসিতে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশসহ নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় গত অক্টোবরে ঢাকায় এসেছিল এনডিআই ও আইআরআইয়ের একটি প্রতিনিধি দল। তারা মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, বিদেশি কূটনীতিকসহ অংশীজনদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করে। ওয়াশিংটনে ফিরে ওই প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থার সমাধান এবং বাস্তবসম্মত, দীর্ঘস্থায়ী ও বিশ্বাসযোগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে খোলা মনে সংলাপের আহ্বানসহ পাঁচ দফা সুপারিশ করে। তাদের সুপারিশ অ্যানডোর্স করেছিল বাইডেন প্রশাসন। যদিও কাঙ্ক্ষিত সেই সংলাপ হয়নি। শর্তহীন সংলাপ চেয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু প্রধান ৩টি দলকে চিঠি দেয়ার পরপরই ভোটের তফসিল ঘোষণা করে দেয় নির্বাচন কমিশন।