নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ
Advertisements

 নারায়ণগঞ্জ শহরের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় একটি মসজিদে বিস্ফোরণে তিন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, প্রায় অর্ধশত মানুষ দগ্ধ অথবা আহত হয়েছেন। আজ (শুক্রবার) রাতে এশার নামাজ চলার সময়ে পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় ওই মসজিদে ৬০-৭০ জন উপস্থিতি ছিলেন।

এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে একাধিক মতামত রয়েছে। কেউ বলছে, মসজিদের ভিটির নিচ থেকে গ্যাস বিস্ফোরণ। কেউ বলছে, মসজিদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) যন্ত্র বিস্ফোরিত হয়েছে। এদিকে মসজিদের ভেতর ছয়টি এসি দুমড়ে মুচড়ে গেছে। ২৫টি সিলিং ফ্যানের পাতা বাঁকা হয়ে গেছে।

ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, এশার নামাজ পড়ার সময় একইসঙ্গে মসজিদের ছয়টি এসি বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন লেগে যায়। এ সময় শতাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করছিলেন। এ ঘটনায় তিনজন নিহত ও ৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দগ্ধদের মধ্যে ৩৭ জনকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। বাইতুস সালাত জামে মসজিদের ইমাম আবদুল মালেক (৬০) এবং মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেনও (৫০) আছেন ওই ৩৭ জনের মধ্যে।

ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, প্রায় ৩৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আনা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় আরও অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। আর যাদের বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছে তাদের চিকিৎসা চলছে। তাদের প্রায় সকলের অধিক বার্ন রয়েছে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ফতুল্লা থানার পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় মসজিদের ভেতরে অর্ধশতাধিক লোক নামাজ পড়ছিলেন। এর মধ্যে হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণ ঘটলে ভেতরে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ধাক্কায় মসজিদের থাই গ্লাস উড়ে গিয়ে পড়ে। ভেতরে যারা ছিলেন, প্রায় সবাই কমবেশি দগ্ধ হয়েছেন। মসজিদ থেকে বেরিয়ে এসে বহু মানুষ রাস্তায় জমে থাকা পানিতে গড়াগড়ি খাচ্ছিলেন গায়ের আগুন নেভানোর জন্য।”

রাত পৌনে ৯টার দিকে ওই মসজিদে আগুন লাগার খবর পাওয়ার কথা জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা কামরুল আহসান বলেন, তাদের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ফায়ার ব্রিগেডের উপ পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন বলেন, “দেড় টনের ৬টি এসি ছিল। সবগুলো একসাথে বিস্ফোরিত হয়েছে। এসিতে ব্যবহৃত ফ্রেয়ন গ্যাসের অস্থিত্ব আমরা মসজিদের ভেতরে বাতাসে পেয়েছি। এর পেছনে অন্য কোনো ঘটনা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে বলে জনান তিনি।

পার্সটুডে

Advertisements