স্বনামখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক সিমুর হার্শ সম্প্রতি নর্ডস্ট্রিম-১ এবং নর্ডস্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইনে বিস্ফোরণ সম্পর্কে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। ওই নিবন্ধে তিনি পাইপলাইনে বিস্ফোরণের জন্য মার্কিন নৌবাহিনীর ডুবুরিদের দায়ী করেছেন।
হার্শ লিখেছেন: গত জুনে বাল্টপস-২২ নামে পরিচালিত বৃহৎ ন্যাটো মহড়ায় মার্কিন নৌবাহিনীর ডুবুরিরা অংশ নিয়েছিল। ওই মহড়া চলাকালে নৌবাহিনীর সদস্যরা রিমোট-নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরক দ্রব্য স্থাপন করেছিল। মহড়ার তিন মাস পরে তারা নর্ডস্ট্রিমের ৪টি পাইপ-লাইনের ৩টি ধ্বংস করে দেয়।
হার্শের বক্তব্য অনুযায়ী এই অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত স্বয়ং জো-বাইডেন নিজেই নিয়েছে। কিন্তু হোয়াইট হাউজ এই সত্য প্রকাশ করতে অস্বীকার করছে। “নর্ডস্ট্রিম-১” এবং “নর্ডস্ট্রিম-২” গ্যাস পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটেছিল গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বরে। বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে ইউরোপে রাশিয়ান গ্যাস রপ্তানির উদ্দেশ্যে ওই পাইপ লাইন দুটি স্থাপন করা হয়েছিল। হার্শের গবেষণা অনুযায়ী আমেরিকা এই পাইপলাইনে হামলা চালানোর জন্য ২০২১ সাল থেকেই প্রায় ৯ মাস ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। তিনি আরও জানান রাশিয়ার নর্ডস্ট্রিম পাইপলাইনে মার্কিন হামলায় নরওয়েরও হস্তক্ষেপ রয়েছে। গ্যাস পাইপলাইনগুলোতে কীভাবে সর্বোত্তম উপায়ে নাশকতা চালানো যায় সে ব্যাপারে বাইডেন অন্তত ৯ মাস ধরে গোপনে এবং প্রকাশ্যে আলোচনা করেছেন বলে জানান হার্শ। এতো দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনার বিষয় এটা ছিল না যে অভিযানটি কীভাবে সম্পন্ন করা হবে। আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছিল এই হামলার জন্য কে বা কারা দায়ী-সে সম্পর্কে তথ্যসূত্র গোপন করা যায় কীভাবে সে বিষয়টি।
হোয়াইট হাউজ তাই হার্শের নিবন্ধকে পুরোপুরি ভুল এবং কল্পনা প্রসূত গল্প বলে িউড়িয়ে দিতে চাচ্ছে। পেন্টাগনের মুখপাত্র গ্যারন গার্নও দাবি করেছেন: নর্ডস্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইনে বিস্ফোরণের ঘটনায় আমেরিকার কোনোরকম হাত নেই। তিনি রাশিয়া, ইউক্রেন এবং ইউরেশিয়া বিষয়ক মার্কিন উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী লোরা কুপারের বক্তব্যের প্রতিও ইঙ্গিত করেন। কুপার ২০২২ সালের ৪ অক্টোবরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন: ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় আমেরিকা কোনোভাবেই জড়িত ছিল না।
রাশিয়া এর আগেও নর্ডস্ট্রিম বিস্ফোরণের জন্য সরাসরি আমেরিকা দায়ী বলে দাবি করেছিল। রুশ পরিরাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এ সম্পর্কে বলেছিলেন নর্ডস্ট্রিম বিস্ফোরণের সাথে আমেরিকা সরাসরি জড়িত ছিল। ২ ফেব্রুয়ারিতে তিনি বার্তা সংস্থা রিয়ানোভস্কিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই দাবি করেন। মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিক্টোরিয়া নোল্যান্ডের এক অভিব্যক্তি থেকেও তার প্রমাণ মেলে। গত ২৬ জানুয়ারি তিনি বলেছিলেন: ওয়াশিংটন সরকার একথা জেনে খুব খুশি যে নর্ডস্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইন কাজ করছে না।