প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যদি বাংলাদেশকে রক্ষা করতে চাই তাহলে আমাদের নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ের মন্ত্রিসভাকক্ষে ঢাকার চার পাশের নদীগুলোর নাব্য রক্ষা ও দূষণ রোধে প্রণীত মহাপরিকল্পনার আলোকে সমীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে এক সভায় সোমবার এ কথা বলেন।
ক্ষমতায় আসার পর তার সরকারের লক্ষ্য ছিল নদী রক্ষা, নাব্য বজায় রাখা এবং দূষণ থেকে রক্ষা করা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকারের প্রথম মেয়াদে নদী ড্রেজিং শুরু হয়েছিল এবং জমি পুনরুদ্ধারের জন্য পলিমাটি ব্যবহার করা হয়েছিল। নদীভাঙন রোধে আমাদের ড্রেজিং করতে হবে। নাব্য বজায় রাখতে হবে। একসময় নদী শাসনের নামে উর্বর ফসলি জমিতে বেড়িবাঁধ তৈরি করা স্বাভাবিক ঘটনা ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীর ধারে যেসব শিল্পকারখানা গড়ে ওঠে সেগুলোর বর্জ্য সাধারণত নদীতে যায়। স্যুয়ারেজ লাইনের সব বর্জ্যও নদীতে যায়। এতে দূষণ বাড়ছে। আমরা যা-ই করি না কেন, প্রথমেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা আমাদের মনে রাখতে হবে। দূষণের কারণে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে দুর্গন্ধ আসা খুবই বেদনাদায়ক। রাজধানীর আশপাশের নদীগুলোকে বাঁচাতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নদী শাসনের জন্য নদীর গভীরতার কথা বিবেচনায় রাখতে হবে। আমাদের অবশ্যই বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের লক্ষ্যে নদীর পাশাপাশি একটি বাফার জোন তৈরি করতে হবে। আমি ক্ষমতায় আসার পর থেকে সবাইকে সব নগরীর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করতে বলেছি। আমরা যে পরিকল্পনাই গ্রহণ করি না কেন সেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পানির প্রবাহ সঠিকভাবে বজায় রাখতে হবে। এটা খুবই দুঃখজনক যে, অতীতে দেশের উন্নয়ন কর্মসূচি পরিকল্পিতভাবে হয়নি।
শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তান আমলে এটি হয়নি এবং এমনকি ১৯৭৫ সালের পর যারা অস্ত্র নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছিলেন তারাও দেশের সামগ্রিক সমন্বিত ও পরিকল্পিত উন্নয়নে মনোযোগ দেননি। ফলে পরিবেশগত সমস্যাগুলো উপেক্ষিত হয়েছে এবং নদীগুলোও দখল করা হয়েছে। এ সময় তিনি পরিবেশ সংরক্ষণের কথা মাথায় রেখে যে কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন।
সূত্রঃ বাসস