ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমজানের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও মাসলা-মাসায়েল শীর্ষক এক আলোচনা সভায় হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এতে ৬ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী।
বুধবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের মসজিদে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- আইন বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী সাফওয়ান, রেজওয়ান রিফাত, শাহীন, সাকিব তূর্য, মাহাদী, কুতুবউদ্দিন। শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মো. তাওহীদুল ইসলাম সুজনের নেতৃত্বে এ হামলা হয় বলে জানা গেছে। যদিও হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন। সুজন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
জানা গেছে, আইন বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী জোহরের নামাজ পড়তে বঙ্গবন্ধু টাউয়ারে আসেন। এসময় তারা নামাজ শেষে রমজানের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও মাসলা মাসায়েল সম্পর্কে আলোচনা করতে চাইলে বাধা দেন বঙ্গবন্ধু টাউয়ার কর্মচারী সমিতির সভাপতি সিরাজুল হক।
এখানে আলোচনা করা ভিসি ও প্রক্টর থেকে নিষেধ করা আছে। এবং সেন্ট্রাল মসজিদ ব্যতীত অন্য কোথাও রমজানের আলোচনা করা যাবে না বলে জানান তিনি। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা তাওহীদুল ইসলাম সুজন শিক্ষার্থীদের মসজিদ থেকে বের হতে বলেন। শিক্ষার্থীরা মসজিদ থেকে বের হয়ে সেন্ট্রাল মসজিদের দিকে যেতে চাইলে গেটের মুখেই তাওহীদুল ইসলাম সুজন ও তার অনুসারীরা তাদের উপর হামলা করে। তাদেরকে রাস্তায় ফেলে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি দিতে থাকেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শামীম শহীদী বলেন, আমার তাবলীগের বন্ধু ও বড় ভাইয়েরা রোজার আমল ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করতে বঙ্গবন্ধু টাউয়ারের মসজিদে আসি। আমরা আগেই এটা প্রচার করেছি যে আমরা রোজার ফজিলত, মাসলা মাসায়েল নিয়ে আলোচনা করবো। কিন্তু হঠাৎ অপরিচিত কয়েকজন মসজিদে এসে আমাদের বের হতে বলে। তাছাড়া টাউয়ারের কর্মচারীরাও আমাদের চলে যেতে বললে আমরা বের হই। এ সময় আমরা গেটের কাছাকাছি আসতেই ৩০/৪০ জন আমাদের উপর হামলা করে। পরে আমরা জানতে পারি তারা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছিলো। তাবলীগের উপর ছাত্রলীগ হামলা করবে আমরা ভাবতেও পারিনি।
বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের গেট দারোয়ান বলেন, শিক্ষার্থীরা বাইরে বের হতে না হতেই আগে থেকে পাশে অপেক্ষা করা কিছু ছেলে তাদের উপর হামলা করে। এ সময় কয়েকজনকে রাস্তায় ফেলে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, আহত তিনজনের অবস্থা গুরুতর। শাহিনুরকে জরুরি বিভাগের নিউরোসার্জারি ও সাকিবকে নাক, কান, গলা বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ঘটনাটি শাহবাগ থানা পুলিশ তদন্ত করছে।