স্বাধীনতার এ মাসে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গত সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়াল এ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ঘিরে ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি সমাবেশ করার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ব্যানারে এ সমাবেশটি ২৬ মার্চের দু-এক দিন আগে বা পরে হতে পারে।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে ইতোমধ্যে বিএনপি ১৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটির আহ্বায়ক হচ্ছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম এবং সদস্য সচিব সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রমজানের পরে কী ধরনের কর্মসূচি দেয়া যেতে পারে তা নিয়ে মতামত এসেছে। বৈঠকে এক নেতা বলেন, রমজানে সাংগঠনিক কর্মসূচি হিসেবে ইফতার মাহফিল চলছে। কারামুক্ত নেতাদের বাসায় বাসায় গিয়ে তাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে। কিন্তু রমজানের পরে কী ধরনের কর্মসূচি নেয়া যায় তা নিয়ে এখনই ভাবা দরকার। নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে হলে জনসম্পৃক্ত নানা কর্মসূচি দিতে হবে। বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক মেরুকরণ, রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সহিংসতা, নাগরিক স্থান সংকুচিত এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অবনতি এবং প্রাক-নির্বাচন পরিবেশ নির্বাচনের গুণমানকে হ্রাস করেছে।
বাজার সিন্ডিকেটের মূল পৃষ্ঠপোষক সরকার : এ দিকে গতকাল এক বিবৃতিতে বিএনপি বলেছে, দ্রব্যমূল্যের লাগাতার ঊর্ধ্বগতি, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য এবং সরকারের প্রতারণাপূর্ণ ভূমিকার কারণে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। পবিত্র এ রমজানেও তারা মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামে মানুষ আজ দিশেহারা। ডামি নির্বাচনের সরকার বাজারে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে হাঁকডাক দিলেও এটা এখন প্রমাণিত যে, সরকারই সিন্ডিকেটের মূল পৃষ্ঠপোষক। ফ্যাসিস্ট সরকার বিগত ১৬ বছরে কখনোই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারেনি।
সরকার আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিলেও আন্তর্জাতিক বাজারে যখন দাম নিম্নমুখী তখনো সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। কারণ এই সিন্ডিকেটের মূল পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে সরকার। বিবৃতিতে বলা হয়, কয়েক দিন আগে সরকার গরুর গোশত, দেশী পেঁয়াজ, ছোলা, ব্রয়লার মুরগিসহ ২৯ নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। বাজারে তারা ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু তার কোনো কার্যকারিতা বাজারে নেই। বেঁধে দেয়া ২৯টি পণ্যের দাম তো কমেইনি বরং বেড়েছে। ফলে সরকারের এইসব তৎপরতা যে জনগণকে কেবল ধোকা দেয়ার জন্যই সেটা এখন স্পষ্ট। শুধু তা-ই নয়, জনগণ এসব প্রতারণা বুঝে ফেলায় সরকারি দলের নেতারা এখন ন্যক্কারজনকভাবে বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতির দায় বিরোধী দলের ওপরে চাপাতে চাইছে।
বিএনপি বলেছে, জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সমস্যার মূলে আঘাত করতে হবে এবং জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সিন্ডিকেটের পৃষ্ঠপোষক, লুটেরা ও প্রতারক ডামি সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেতে জনগণকেই ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানানো হয় বিবৃতিতে।