জেনে নিন ঘূর্ণিঝড়ের কোন সতর্ক সংকেতের অর্থ কী
Advertisements

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ থেকে বাংলাদেশ অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে এর প্রভাবে সুন্দরবন এলাকায় মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে।

গভীর নিম্নচাপ থেকে সোমবার ভোরে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর পূর্বে ঠিক করা তালিকা অনুযায়ী এটির নাম হয় ‘ইয়াস’।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে নদী ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে ১ থেকে ১১ পর্যন্ত সতর্ক সংকেত দেখানো হয়। যদিও আবহাওয়া বিভাগ উপকূলীয় এলাকাগুলোর জন্যও সতর্কতা হিসেবে একই সংকেত ব্যবহার করে। এই সংকেতগুলোর প্রতিটির পৃথক পৃথক অর্থ রয়েছে।

এ বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

১ থেকে ১১ এর সংক্ষিপ্ত অর্থ:

১ নং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত
জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার (কি.মি.)। ফলে সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হবে।

২ নং দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত
দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে।

৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত
বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কি.মি. হতে পারে।

৪ নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত
বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কি.মি.। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এখনও আসেনি।

৫ নং বিপদ সংকেত
বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৬ নং বিপদ সংকেত
বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৭ নং বিপদ সংকেত
বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কি.মি.। ঝড়টি বন্দরের উপর বা এর নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৮ নং মহাবিপদ সংকেত
বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি. বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

৯ নং মহাবিপদ সংকেত

বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি. বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

১০ নং মহাবিপদ সংকেত

বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি.মি.বা তার বেশি হতে পারে।

১১ নং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত

আবহাওয়ার বিপদ সংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সাথে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।

নদীবন্দর ও সমুদ্র বন্দরের জন্য সতর্কতা সংকেত আলাদা। তাই সতর্কতা সংকেত ভাল করে বুঝে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

Advertisements