গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে নারীর অনৈতিক অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।দীর্ঘ বিশ বছর পর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। সম্মেলনকে ঘিরে যেমন দলের নেতাকর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে তেমনি ত্যাগী নেতারা দলীয় পদ পেতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তারা সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের কাছে তুলে ধরে কর্মীদের সুসংগঠিত করার কাজ করে যাচ্ছেন। অপরদিকে বহিরাগতরা দলে এসে পদ বাগিয়ে নিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এদিকে ১৫ অক্টোবর গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এ সম্মেলন ঘিরে প্রার্থীদের মধ্যেও ব্যর্থতা-সফলতাসহ ব্যক্তিগত ইমেজ তুলে ধরার প্রতিযোগিতা চলছে। সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসছেন সভাপতি ও সম্পাদক পদে প্রার্থীদের নাম।
ইতোমধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান মাস্টার ও খলিলুর রহমানের নারী কেলেঙ্কারির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিশেষ করে কোনাবাড়ী এলাকায় সাধারণ মানুষকে আপত্তিকর ভিডিও ডাউনলোড করতে দেখা যায়। এ দুই প্রার্থীর অশ্লীল ভিডিও নিয়ে ফেসবুক ছাড়াও এলাকার বিভিন্ন বাজার, চায়ের দোকান ও উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ সর্বত্র লোকমুখে আলোচনা-সমালোচনা ঝড় চলছে।
জানা গেছে, এর আগেও আবদুর রহমান শিক্ষকতা করাকালীন এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে বরখাস্ত হয়েছিলেন। পরে ২০১২ সালে কোনাবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী সভায় বর্তমান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সামনে নারীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রকাশ্যে জুতাপেটাও করা হয় তাকে। ভাইরাল হওয়ার ভিডিওর বিষয়ে কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বলেন, এমন অনৈতিক কাজে জড়িতদের দলের নেতা হিসাবে মেনে নেওয়া যায় না।
এ বিষয়ে আবদুর রহমান মাস্টার যুগান্তরকে জানান, একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ইমেজ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিও প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। পরে এ প্রতিবেদককে সংবাদ প্রচার না করতে অনুরোধ জানিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালান। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটা নিজের বলে স্বীকার করে খলিলুর রহমান জানান, ভিডিওটা পুরোনো। আসন্ন কোনাবাড়ী সম্মেলনকে ঘিরে একটি পক্ষ তাকে পদবঞ্চিত করতে এগুলো আবার নতুন করে প্রচার করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, খলিলের চারিত্রিক ত্রুটি আগে থেকেই আছে। তিনি জনগণের সেবক হন কীভাবে জানি না।
স্থানীয় আরেক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এসব চরিত্রহীন নেতাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রাখলে নির্বাচনের সময় দল ইমেজ সংকটে পড়বে।
এদিকে এসব ঘটনায় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। একটি পক্ষ দাবি করছে, দলীয় হাইকমান্ডের কয়েকজন নেতাকে বিপুল টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে কমিটি বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কোনাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের প্রবীণ এক নেতা জানান, নারী কেলেঙ্কারি তাদের জন্য সামান্য বিষয়। এরা খুবই খারাপ এবং নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। এদের কোনাবাড়ী আওয়ামী লীগের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বে রাখা হলে দলীয় সুনাম নষ্ট হবে।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান বলেন, অশ্লীল এ ভিডিওগুলো কারা, কী উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়াল এ বিষয়ে আগে খতিয়ে দেখা হবে। আর দলীয় ফোরামে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাদের দুজনের বিরুদ্ধে।