গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বহিষ্কারের ঘোষণা ট্রাম্পের
Advertisements

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার কোনো রাখঢাক না রেখেই ঘোষণা দিয়েছেন, গাজাবাসী ফিলিস্তিনিদের এই উপত্যকা থেকে বহিষ্কার করা হবে। তার এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ফিলিস্তিনিদের সামনে গাজায় থাকার আর কোনো বিকল্প নেই—তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। তিনি আরও বলেন, গাজা এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এবং এটি “জাহান্নামে” পরিণত হয়েছে।

ট্রাম্প দাবি করেন, গাজাবাসী সেখানে শুধুমাত্র এ কারণে ফিরে যেতে চায় যে, তাদের সামনে অন্য কোনো বিকল্প নেই। তবে যদি তাদের জন্য নতুন ও উন্নত জায়গার ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে তারা গাজায় ফিরতে চাইবে না।

এর আগে মঙ্গলবার দিনের শুরুতেও ট্রাম্প একই ধরনের মন্তব্য করেন। তিনি গাজাকে “ধ্বংসস্তূপ” উল্লেখ করে বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিকল্প জায়গায় থাকার সুযোগ দেওয়া হলে তারা “পুলক অনুভব করবে”। তার মতে, গাজাবাসীর জন্য অন্য কোনো স্থানে পুনর্বাসনই হবে অধিকতর স্বস্তির।

ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে ‘বর্ণবাদী’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। তাদের মতে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার অস্বীকার করার নগ্ন প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জুহরি এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ও গোলযোগ বাড়ানোর ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছি। গাজার জনগণ এই পরিকল্পনা কখনোই বাস্তবায়ন হতে দেবে না।”

হামাসের আরেক নেতা ইজ্জত আর-রিশক বলেন, “গাজাবাসী ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে ভয়াবহ বোমাবর্ষণের মধ্যেও নিজেদের ভূমি রক্ষা করে চলেছে। তাদেরকে সেখান থেকে বিতাড়িত করার কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না।”

হামাসের মতে, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের মূল উদ্দেশ্যই ছিল ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা, আর ট্রাম্পের বক্তব্য সেই পরিকল্পনাকেই বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা। তারা জোর দিয়ে বলেছে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধের মধ্য দিয়ে, ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের মাধ্যমে নয়।

ট্রাম্পের এই বক্তব্য নতুন করে ফিলিস্তিন সংকটকে আরও উসকে দেবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Advertisements