গাজা থেকে ইহুদিবাদীদের পলায়নের সতেরো বছর
Advertisements

ইহুদিবাদী ইসরাইল ২০০৫ সালের ১৫ আগস্টে গাজার ২১টি ইহুদি বসতি মুক্ত করেছিল। এই বসতিগুলিতে আট হাজারের মতো বাসিন্দা ছিল।

গাজা উপত্যকার প্রায় ৩৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করে রেখেছিল তারা। গাজার মোট আয়তন ৩৬০ বর্গকিলোমিটার। তার মানে গাজার আয়তনের এক দশমাংশই দখল করেছিল ইসরাইল। এই বিরাট অর্জন বিভিন্ন দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথমত, দখলের ৩৮ বছর পর ফিলিস্তিনীরা ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের গাজা থেকে তাড়াতে সক্ষম হয়। ১৯৬৭ সালে ইহুদিবাদীরা গাজা দখল করেছিল। এ থেকে প্রমাণিত হয় প্রতিরোধের তাৎক্ষণিক ফলাফলের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি ফলাফলও রয়েছে।

দ্বিতীয়ত, সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এই অর্জনের গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে। ২০০০ সালে ইহুদিবাদী সেনারা দক্ষিণ লেবানন থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিল। তার ৫ বছর পর এই বর্ণবাদীরা আরেকবার ব্যাপকভাবে পরাজিত হয় গাজায়। ২০০১ সালে নির্মাণ করা এই উপশহরগুলো চার বছর পর ফিলিস্তিনীদের ছেড়ে যেতে বাধ্য হয় ইসরাইল।

তৃতীয়ত, গাজা থেকে ইহুদিবাদীদের চলে যাওয়া দ্বিতীয় ইন্তিফাদার ফল। ২০০০ সাল থেকে দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শুরু হয়ে ২০০৫ সালে শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ইন্তিফাদা ছিল প্রতিরোধের একটি বাস্তব বহিঃপ্রকাশ। গাজা থেকে ইহুদিবাদী সেনা প্রত্যাহারও প্রতিরোধেরই অন্যতম অর্জন। টানেলের মাধ্যমে যুদ্ধ করে ইহুদিবাদীদের ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করার কারণেই ইহুদিবাদীরা গাজা ত্যাগ করেছিল।

চতুর্থত, গাজা উপত্যকা থেকে ইহুদিবাদী সামরিক বাহিনীর প্রত্যাহারের সময় তাদের অপরাধী চেহারা ফুটে উঠেছে। পালানোর সময় তারা সমস্ত বাড়িঘর, শিলালিপি এবং ব্যারাক ধ্বংস করতে করতে গিয়েছিল। এভাবে তারা তিন হাজারেরও বেশি বাড়ি এবং ২৬ টি শিলালিপি ধ্বংস করে।

পঞ্চমত গাজা ছেড়ে পালানোর এক বছর পর ইহুদিবাদীরা গাজার ওপর সার্বিক অবরোধ আরোপ করে। ওই অবরোধ আজও বজায় রয়েছে। গাজাকে তারা কার্যত বিশ্বের বৃহত্তম উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত করেছে। এই অবরোধ একদিকে যেমন প্রতিরোধের দুর্দান্ত সাফল্য অপরদিকে ইহুদিবাদীদের পরাজয়ের বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ছাড়া আর কিছু নয়।

Advertisements