ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইল কোনো গণহত্যা চালাচ্ছে না বলে চরম মিথ্যা ও কপটতাপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গাজায় ইসরাইলের বর্বর বাহিনী গণহত্যা চালাচ্ছে কিনা সেই আলোচনাও তিনি নাকচ করে দিয়েছেন।
একইসাথে জো বাইডেন সর্বাবস্থায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল (মঙ্গলবার) হোয়াইট হাউজে ইহুদিদের জন্য আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকালই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসি’র চিফ প্রসিকিউটর করিম খান ঘোষণা করেন, গাজা আগ্রাসনের জন্য তিনি ইহুদিবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং যুদ্ধমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির চেষ্টা করছেন। তিনি আরো বলেন, গাজা যুদ্ধ শুরুর জন্য হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া, ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং মোহাম্মদ দিয়াব ইব্রাহিম আল-মাসরির বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে চান।
দিনের শেষ দিকে হোয়াইট হাউজে অন্য এক অনুষ্ঠানে বাইডেন আইসিসি’র এই পদক্ষেপের নিন্দা করেন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গাজায় ইসরাইলের হামলাকে গণহত্যামূলক বলে যে বক্তব্য দিয়েছে তারও বিরোধিতা এবং নিন্দা করেন।
জো বাইডেন বলেন, “আমি পরিষ্কার করে বলছি যে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ইসরাইলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করছে আমার অবস্থান তার বিপরীতে। যা ঘটছে তা গণহত্যা নয়। আমরা এটা প্রত্যাখ্যান করছি।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট অত্যন্ত জঘন্য ভাষায় বলেন, “গাজা থেকে হামাস নেতা সিনওয়ার ও অন্য কসাইদের বের করে দেয়ার জন্য ইসরাইল যে চেষ্টা করছে আমরা তার পাশে আছি। আমরা চাই হামাস পরাজিত হোক। এজন্য আমরা ইসরাইলের সাথে কাজ করছি।”
গত ৭ অক্টোবর থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজায় ভয়াবহ আগ্রাসন ও ব্যাপক হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। ইসরাইলের আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি সাধারণ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন যার অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। এছাড়া, গাজার বিভিন্ন স্থান থেকে বহু গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে, যেসব কবর থেকে বহু সংখ্যক লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সমস্ত চাপ উপেক্ষা করে আইসিসি এবং আইসিজে ইসরাইলের এই হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যামূলক যুদ্ধ বলে উল্লেখ করেছে। এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের পক্ষ থেকে ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী ও যুদ্ধমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির চেষ্টা চলছে। এই অবস্থায় আমেরিকা মিথ্যাচার করছে যে, গাজায় কোনো গণহত্যা হয়নি।