আফগানিস্তানের সাবেক আশরাফ গনি সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মাদি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট গনির দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানতেন না। গত বছরের ১৫ আগস্ট তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের মুহূর্তে আশরাফ গনি দেশত্যাগ করেন এবং সে ঘটনা সম্পর্কে এই প্রথম মুখ খুললেন গনির প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের ৪০ দিন আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন বিসমিল্লাহ মোহাম্মাদি। তিনি রোববার কাবুল থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘হাশতে সুবহ’-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে গনি সরকারের পতনের কারণ এবং ওই সরকারের শেষ দিনগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন।
সাবেক আফগান কর্মকর্তারা ওই দিনগুলি সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা তুলে ধরেছেন। অতি সম্প্রতি পলাতক প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তার সরকারের শেষ দিনগুলো সম্পর্কে যে বর্ণনা দিয়েছেন বিসমিল্লাহ মোহাম্মাদি তার জবাব দিয়েছেন।
জেনারেল মোহাম্মাদি আফগানিস্তানে সাবেক সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে আহমাদ শাহ মাসুদের সঙ্গে থেকে লড়াই করেছেন এবং তিনি গত দুই দশকে একাধিকবার সেনাপ্রধান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি তার নিবন্ধে লিখেছেন, ১৫ আগস্ট বেলা ২টার পর তিনি প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে পরপর তিনটি হেলিকপ্টার উড়তে দেখেছেন। তবে তিনি ভেবেছিলেন এটি রুটিন কাজের অংশ। কিন্তু এরপর চতুর্থ হেলিকপ্টারটি উড়ে যাওয়ার পর সেনা সদরদপ্তর থেকে তাকে জানানো হয়, এগুলোর একটিতে প্রেসিডেন্ট গনি আছেন এবং চারটি হেলিকপ্টারই উজবেকিস্তানের দিকে পালিয়ে গেছে।
সাবেক আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, প্রেসিডেন্ট আকাশে ওড়ার আগ পর্যন্ত তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানতে পারেননি এবং আশরাফ গনি এ সম্পর্কে তার সঙ্গে কোনো শলাপরামর্শ করেননি। এর আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মাদি ওই দিন সকালে প্রেসিডেন্টকে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন; কিন্তু বেশিরভাগ মন্ত্রী বৈঠকে বসতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তা অনুষ্ঠিত হয়নি।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গনি সরকারের পতন সম্পর্কে সবচেয়ে খারাপ যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল তাতেও ১৫ আগস্টের মধ্যে এই সরকারের পতন হবে বলে ধরা হয়নি। বলা হচ্ছে যে, তালেবান নিজেরাও এত দ্রুত কাবুল দখলের প্রত্যাশা করেনি।