দেশে ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যবসায়ীদের দেয়া নীতিছাড়ের মেয়াদ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করে এখনো খেলাপি হওয়া থেকে অব্যাহতি পাচ্ছেন অনেক গ্রাহক। তারপরও দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি ১১ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে এ খবর জানা গিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। আজ রোববার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে খেলাপির পরিমাণ ছিল এক লাখ ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩৩ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, মোট বিতরণ করা ১৪ লাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়েছে। সে হিসাবে বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশই খেলাপি। তিন মাসের ব্যবধানে প্রায় ৯ হাজার কোটি (৯ হাজার ১৩৮ কোটি ৫৪ লাখ) টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে খেলাপি ঋণ।
খেলাপি ঋণের মধ্যে ৬৬ হাজার ৬৯৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা দেশের বেসরকারি ব্যাংকের। রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা।
এদিকে বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১২ শতাংশ খেলাপি। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো মোট ৩৫ হাজার ৮২৭ কোটি টাকা বিতরণ করলেও এর মধ্যে খারাপ হয়ে পড়েছে ৪ হাজার ২২৮ কোটি টাকা। এর আগে চলতি বছরের জুন প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতের মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। তারও তিন মাস আগে অর্থাৎ মার্চ শেষে খেলাপি ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।