কৃষ্ণাঙ্গ যুবক আহমদ আরবেরি হত্যায়
Advertisements

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ যুবক আহমদ আরবেরি হত্যায় অভিযুক্ত তিন শ্বেতাঙ্গকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন মার্কিন আদালত। স্থানীয় সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আদালতের বিচারক টিমোথি ওয়ালমসলে এই রায় দেন।

রায়ে বলা হয়, ট্র্যাভিস ম্যাকমাইকেল (৩৫) ও তার বাবা ৬৬ বছর বয়সী গ্রেগরি ম্যাকমাইকেলকে বাকি জীবন কারাগারে কাটাতে হবে। অপর আসামি তাদের প্রতিবেশী উইলিয়াম ব্রায়ানকে (৫০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলেও তিনি ৩০ বছর পর প্যারোলে মুক্তি পেতে পারেন। যা দেশটির রাষ্ট্রীয় আইনে হত্যার জন্য অনুমোদিত ন্যূনতম সাজা।

শুক্রবার ব্রান্সউইকের গ্লিন কাউন্টি আদালতে শুনানিতে ওয়ালমসলে বলেন, ভিডিওতে দেখা ‘নিষ্ঠুর’ আচরণ ও বার্তার জন্য ম্যাকমাইকেল ও তার বাবাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হয়।

মাত্র ২০ ফুট দূর থেকে আরবেরিকে হত্যাকে ঠাণ্ডা মাথার খুন বর্ণনা করে বিচারক বলেন, তাকে হত্যার মাধ্যমে হত্যাকারীরা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছিল।

সাজা শুনানির সময় আরবেরির আত্মীয়রা বিচারককে তিনজনের প্রতি কোনো দয়া না দেখানো অনুরোধ করেছিলেন।

অপরদিকে আসামিদের আইনজীবীরা বলেছিলেন যে তিনজনের কেউই আরবেরিকে ইচ্ছা করে হত্যা করেননি।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছে যে তারা এই সাজার বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

ট্র্যাভিস ম্যাকমাইকেলের আইনজীবী বলেন, সেদিন কোনো অপরাধ করা বা কাউকে হত্যা করা তার লক্ষ্য ছিল না। প্যারোল ছাড়া জেলে থাকা সবচেয়ে খারাপ।

আরবেরির বোন জেসমিন আরবেরি তার ভাইয়ের কথা স্মরণ করেন। তিনি আরেবরিকে বড় মনের ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি একজন স্পষ্টবাদী চিন্তাবিদ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

গত বছরের নভেম্বরে জর্জিয়ার বিচারকরা আহমেদ আরবেরি হত্যায় এই তিনজনকে দায়ী করেন।

২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জর্জিয়ার ব্রুনসউইক শহরে সকালে হাঁটতে বের হওয়ার সময় ২৫ বছর বয়সী আহমদ আরবেরিকে চোর ভেবে তাকে ধাওয়া করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এতে মারাত্মক আহত অবস্থায় আরবেরিকে হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত্যু হয়।

মামলার ময়নাতদন্তে বলা হয়, আরবেরিকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি ছোঁড়া হয়, এর মধ্যে দুটি গুলি তার বুকে ও একটি হাতে লাগে। শ্বেতাঙ্গদের হাতে নিরস্ত্র আরবেরির মৃত্যুর ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।

এরপর অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে পুলিশ। ম্যাকমাইকেলের ব্যাপারে অভিযোগ ছিল হত্যা ও নির্যাতনের। ব্রায়ানের ব্যাপারে অভিযোগ ছিল হত্যা ও অবৈধভাবে আটক করার।

সূত্র : রয়টার্স, আল জাজিরা

Advertisements