আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি বলেছেন, সামরিক বাহিনীকে পুনরায় সংহত করতে এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এক জরুরি ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। তালেবান যোদ্ধারা যখন একের এক শহর দখল করে রাজধানীর কাবুলের দিকে এগিয়ে এসেছে, তখন এ কথা বললেন প্রেসিডেন্ট।
আশরাফ গানি এও বলেন, চলমান যুদ্ধ অবসানের চেষ্টায় জরুরি আলোচনা চলছে। স্থানীয় নেতা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা চলার কথাও বলেছেন আফগান প্রেসিডেন্ট। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের
আফগানিস্তানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম শহর দুটি ইতোমধ্যেই তালেবানের দখলে চলে গেছে। রাজধানী কাবুলের প্রবেশদ্বারও প্রায় তালেবান নিয়ন্ত্রণে। কার্যত কাবুল ঘেরাও হয়ে গেছে এরইমধ্যে। এ অবস্থায় আফগান সামরিক বাহিনী তেমন কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি। সেই সব সেনাদের নিয়েই এবার কাবুলকে শেষ রক্ষার জন্য লড়াই করতে আলোচনা করছেন প্রেসিডেন্ট।
আলজাজিরা জানায়, রাজধানী কাবুল থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার দক্ষিণের চর আসিয়াব শহরে পৌঁছে গেছে তালেবান। এরইমধ্য দেশটির ৩৪টি প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে ১৮টিই দখল করে নিয়েছে এ সশস্ত্রগোষ্ঠী।
তবে প্রেসিডেন্ট গানি তার বক্তব্যে তিনি পদত্যাগ করবেন কি-না বা বর্তমান পরিস্থিতির দায়দায়িত্ব নেবেন কি-না, এমন কোনো ইঙ্গিত দেননি।
তালেবান এখন উত্তর আফগানিস্তানের অধিকাংশ এবং আঞ্চলিক রাজধানীগুলোর অর্ধেক দখল করে নিয়েছে। সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, তালেবান যোদ্ধারা এখন কাবুলের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে।
শুক্রবার লোঘার প্রদেশের রাজধানী পুল-ই-আলম দখল করে তালেবান, যা কাবুল থেকে ৮০ কিলোমিটার বা ৫০ মাইল দূরে। এছাড়া কাবুল থেকে ৪০ কিলোমিটার বা ২৫ মাইল দূরের মায়দান শার নামে আরেকটি প্রাদেশিক রাজধানীতেও এখন তীব্র লড়াই চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
অবশ্য মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আগেই মূল্যায়ন করে বলেছে, তালেবান আগামী ৩০ দিনের মধ্যেই কাবুলের দিকে এগোনোর চেষ্টা করতে পারে। এ নিয়ে সম্প্রতি কাবুলের কাছাকাছি এলাকায় তালেবান অবস্থানগুলোতে মার্কিন বাহিনী বিমান হামলাও চালিয়েছে।
টিভিতে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানিকে গম্ভীর দেখাচ্ছিল। তিনি সেই গম্ভীরতা নিয়েই সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীকে পুনরায় সংহত করায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং এ ব্যাপারে জোরদার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
কিন্তু প্রেসিডেন্ট আফগানিস্তানে গত কিছুদিনে সরকারের নিয়ন্ত্রণ যে প্রায় ভেঙে পড়েছে, এ ব্যাপারে কিছু বলেননি। তার প্রশাসন এ ব্যাপারে কী পরিকল্পনা নিয়েছে, তা নিয়েও মুখ খুলেননি আশরাফ গানি।