আমাদের কিছু নারীবাদী ঘরানার আধুনিক মুসলিম একাডেমিক ব্যক্তিত্ব রয়েছেন। তারা উম্মে সালামা (রা.) কে অভিহিত করেন ‘প্রথম মুসলিম নারীবাদী’ হিসেবে। হ্যা! তারা তাকে এ উপাধিই দিয়েছে- ‘প্রথম মুসলিম নারীবাদী’।
একটা বিষয় সুস্পষ্ট করি, আমি কোনোভাবেই থার্ড ওয়েভ ফেমিনিজমের প্রতি সহানুভূতিশীল নই। জেন্ডার রোল পুরোটাই সমাজ ঘটিত নয়। জেন্ডার রোল বায়োলজিক্যাল, মানবীয় ও ঐতিহাসিক বাস্তবতা। এজন্য আমি এই টার্মের সাথে পুরোপুরি একমত নই। আল্লাহ নারী ও পুরুষকে যে অধিকার দিয়েছেন, সেগুলোই আমাদের চর্চা করা উচিত।
যাহোক, আধুনিক মুসলিম নারীবাদীরা উম্মে সালামা (রা.) এর জীবনের বহু ঘটনা চক্রান্তপূর্ণ উপায়ে বর্ণনা করে। এটাই আমাদের চোখ খুলে দেয়। এটাই তাদের আসল সমস্যা। তবে একইসাথে অতি রক্ষণশীল মুসলিমদেরও সমস্যা রয়েছে। পুরুষ কর্তৃক নারীর উপর জুলুম করা, নারীদের মুখ একদম বন্ধ রাখার প্রবণতার মত বিষয়গুলো সমস্যাপূর্ণ।
নারীবাদীদের দ্বারা উম্মে সালামা (রা.) এর ঘটনাগুলোর উদ্দেশ্যমূলক বর্ণনা প্রমাণ করে আধুনিক মুসলিম নারীবাদীরাও চরমপন্থার দিকে চলে গেছে। এভাবে চরম রক্ষণশীল ওইসলামী নারীবাদীরা একে অপরকে রসদের যোগান দিচ্ছে। যেমনভানে চরম ডানপন্থি ও চরম বামপন্থিরা একে অপরের রসদ জোগায়।
আমাদের বুঝতে হবে, নারীবাদীরা অতি রক্ষণশীলদের প্রতিক্রিয়ায় উদ্ভুত। আবার অতি রক্ষণশীলরা আরো অতি রক্ষণশীল হয়েছে নারীবাদীদের ভয়ার্ত রূপ দেখে। এখানে সমান্তরাল রাস্তার মত অবস্থা। এক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হল, আপনার প্রজ্ঞা ব্যবহার করতে হবে। বাগাড়ম্বর বিষয়গুলো উপেক্ষা করে দৃষ্টি ফেলতে হবে আমাদের।
এটা সত্য যে, পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহে বর্ণিত কিছু জেন্ডার রোল আছে। আরো কিছু জেন্ডার রোল আছে যা বায়োলজিক্যাল। একইসাথে বলতে হবে, জেন্ডার রোলের পরিসর রয়েছে। এমনকি কিছু নারী ও পুরুষ এ পরিসরের মধ্যে অবস্থান করেন না। তারা একটু এদিকে সেদিকে ভূমিকা রাখেন। এজন্য এ নিয়মভুক্ত ভূমিকাগুলোর ব্যাপারে আপনি যাই বলতে চাননা কেন, আপনি দেখবেন এমন নারী পুরুষ রয়েছে যারা তাদের ভূমিকার পরিসরের একদম সীমানার মধ্যে অবস্থান না করেন না। এতে তেমন ভুল নেই।
আগ্রহোদ্দীপক ব্যাপার হল, উম্মে সালামা (রা.) নারী অধিকার নিয়ে নবিজি (সা.) কে জিজ্ঞেস করেছেন। তিনি এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছেন, যা নারীদের ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত। উম্মুল মুমিনিনদের মধ্যে একমাত্র তিনিই এটা করেছেন। এতে প্রমাণিত হয়, তার এমন আধ্যাত্মিক ও মানসিক যোগ্যতা তেমনই ছিল। প্রশ্ন করতে কোনো দোষ নেই। তিনি নবীজি (সা.) কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি যেসব প্রশ্ন নবীজি (সা.) কে জিজ্ঞেস করেছেন, আমাদের বোনেরা যদি এসব জিজ্ঞেস করেন তবে আমাদের ভাইরা বলে বসবেন,
“এটা জিজ্ঞেস করার সাহস কি করে হল তোমার!”
কিন্তু যিনি নবিজি (সা.) কে জিজ্ঞেস করছেন উম্মে সালামা (রা.), তারই স্ত্রী।
নবিজি (সা.) কে খুব গভীর প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতেন উম্মে সালামা (রা.) । যেমন, একদিন তিনি জিজ্ঞেস করে বসলেন,
“ইয়া রাসূলাল্লাহ! মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে সবসময় পুরুষদের নামই উল্লেখ করেন। নারীদের কেন নয়?”
আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, কেন আধুনিক মুসলিম নারীবাদীরা তাকে প্রথম মুসলিম নারীবাদী মনে করে। কারণ, এ প্রশ্ন এ ধরণের প্যারাডাইম থেকেই আসছে- “আল্লাহ পুরুষদের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেছেন, পবিত্র কুরআনে নারীরা তাহলে কোথায়?”
এর জবাবে মহান আল্লাহ তায়ালা সূরা আহযাবের ৩৫ নম্বর আয়াত নাযিল করলেন। এটি অবশ্যই পবিত্র কুরআনের বিখ্যাত একটি আয়াত-
নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও নারী, মুমিন পুরুষ ও নারী, অনুগত পুরুষ ও নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও নারী, বিনয়াবনত পুরুষ ও নারী, দানশীল পুরুষ ও নারী, সিয়ামপালনকারী পুরুষ ও নারী, নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী পুরুষ ও নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও নারী, তাদের জন্য আল্লাহ মাগফিরাত ও মহান প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন। (সূরা আহযাব, আয়াত নং-৩৫)
অত্র আয়াতে নারী ও পুরুষ উভয়কে সমহারে উল্লেখ করে বলছেন, তাদের জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিরাট পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সুতরাং এ আয়াত থেকে এটা খুবই সুস্পষ্ট যে জান্নাতে প্রবেশের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ উভয়ই মহান আল্লাহর চোখে সমান। আর এটাই আসল সমতা। সত্যিকার সমতা এই দুনিয়ার নয়।
দুনিয়াতে আমরা সকলেই আমাদের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য, যোগ্যতা ও প্রেক্ষাপট অনুযায়ী কাজ ও কাজের ফলাফল লাভ করি। ডাক্তারকে ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্ব দেয়া হয় না। ইঞ্জিনিয়ারকে মেকানিকের দায়িত্ব দেয়া হয় না। প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা দায়িত্ব রয়েছে। যদি ৪ বছরের ট্রেনিং কোর্স আপনাকে ভিন্ন দায়িত্ব অর্পন করে, তাহলে বায়োলজিক্যাল জন্ম বা নারী-পুরুষ হিসেবে জন্ম নেয়ার ক্ষেত্রে নয় কেন?
এসব নিয়ে আলোচনা করলে অনেকেই আমাকে সমস্যার সম্মুখীন করবেন, যদিও আমি ইতিমধ্যেই সমস্যায় আছি। আমি বলতে চাচ্ছি, আপনি যখন জেন্ডার রোলকে প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন, তখন আপনি জেন্ডারকেও প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন। এটাই আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি।
আপনি বিগত ২৫-৩০ বছর ধরে জেন্ডার রোলকে অত্যন্ত নির্দয়ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে এসেছেন। ‘এগুলো সমাজ গঠিত (Societal constructs)’ -এটা বলে আপনি এতদিন জেন্ডার রোলকে ধ্বংস করছেন। এর পরবর্তী ফলাফল হল, আপনি জেন্ডারকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবেন। এটাকেও এখন প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে (গে, লেসবিয়ান ইস্যুকে ইঙ্গিত করছেন ইয়াসির ক্বাদি -অনুবাদক)
আমাদের বক্তব্য হল, আল্লাহ প্রদত্ত্ব কিছু জেন্ডার রোল রয়েছে, আবার সমাজ ও সংস্কৃতি গঠিত কিছু জেন্ডার রোল রয়েছে। আমি একমত, কিছু জেন্ডার রোল সংস্কৃতি থেকে আসে। কিছু জেন্ডার রোল সমাজগঠিত, তবে সব জেন্ডার রোল নয়, আর এটা পবিত্র কুরআনে সুস্পষ্টভাবে এসেছে-
وَ لَیْسَ الذَّكَرُ كَالْاُنْثٰىۚ
-“কোন পুরুষ নারীর মত নয়।” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং-৩৬)
পয়েন্ট হল, আপনারা যদি পূর্বোল্লিখিত সূরা আহযাবের ৩৫ নম্বর আয়াত খেয়াল করেন আয়াত খেয়াল করেন তবে আপনি সেখানে ভালো কাজের উল্লেখ পাবেন। যখন ভালো কাজের প্রসঙ্গ আসে, তখন কোনো বৈষম্য নেই। নারী ও পুরুষ যিকর করেছে, আল্লাহ এক্ষেত্রে পুরুষকে নারীর তুলনায় বেশি প্রতিদান দেবেন না। যিকর, সালাত ও সদকাহের প্রতিদান কোনো নারীকে পুরুষের তুলনায় বেশি বা কম দিবেন না। সুতরাং ভালো কাজের ক্ষেত্রে, আল্লাহ আয়াতটিতে প্রায় এক ডজন ভালো কাজ উল্লেখ করেছেন, আল্লাহ বলেছেন ভালো কাজের প্রতিদান প্রাপ্তিতে সবাই সমান। এখানে কোনো সমস্যা নেই।
যাহোক, আমরা উম্মে সালামা (রা.) কর্তৃক রাসূল (সা.) কে জিজ্ঞাসিত দ্বিতীয় প্রশ্নে যাই। তিনি নবীজি (সা.) কে জিজ্ঞেস করলেন,
“ইয়া রাসূলাল্লাহ! মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে মুহাজিরদের প্রশংসা করেছেন। নারী মুহাজিরদের কথা আসে নি কেন?”
আপনারা জানেন, আল্লাহ বলেছেন,
اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ الَّذِیْنَ هَاجَرُوْا وَ جٰهَدُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِۙ أُولَٰئِكَ یَرْجُوْنَ رَحْمَتَ اللّٰهِؕ وَ اللّٰهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ
নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহর পথে হিজরত করেছে ও জিহাদ করেছে, তারা আল্লাহর অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে। আর আল্লাহ পরম ক্ষমাশী, অতি দয়ালু। (সূরা বাকারা, আয়াত নং-২১৮)।
এখানে আল্লাহ পুরুষবাচক ক্রিয়াপদ ‘هَاجَرُوْا’ ব্যবহার করেছেন। এজন্যই উম্মে সালামা (রা.) জিজ্ঞেস করছেন, তাহলে নারী মুহাজিরদের কথা আসে নি কেন?
মহান আল্লাহ তার এ প্রশ্নের জবাবে সূরা আলে ইমরানের ১৯৫ নম্বর আয়াত নাযিল করেন। এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, আল্লাহ তার প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন। এটি উম্মে সালামা (রা.) এর আরেকটি মর্যাদা। ‘নারীবাদী ইস্যু’ সম্পর্কিত তার জিজ্ঞাসিত কমপক্ষে তিনটি প্রশ্নের জবাবে আল্লাহ ওহী নাযিল করেছেন। আসলে ‘নারী সম্পর্কিত ইস্যু’ ইস্যু। আমি ‘নারীবাদ’ পরিভাষাটি পছন্দ করি না। যাহোক, আল্লাহ তার এ প্রশ্নের জবাব সূরা আলে ইমরানে দিয়েছেন,
فَاسْتَجَابَ لَهُمْ رَبُّهُمْ
“তাদের রব তাদেরকে জবাব দিয়েছেন।” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং-১৯৫)
কি জবাব দিয়েছেন?
اَنِّیْ لَاۤ اُضِیْعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِّنْكُمْ مِّنْ ذَكَرٍ اَوْ اُنْثٰىۚ
“নিশ্চয়ই আমি তোমাদের, নারী হও বা পুরুষ কারো আমলই (আমলের প্রতিদান) নষ্ট করবো না।” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং-১৯৫)
লক্ষ্য করুন, সমান পুরস্কার। আল্লাহর শপথ! এটা সুস্পষ্ট। আপনি এর বিরুদ্ধে কোনো যুক্তিই উপস্থাপন করতে পারবেন না। পবিত্র কুরআনে সমতা প্রদান করা হয়েছে, সওয়াবের সমতা। এটা হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত্ব সমতা। আল্লাহর প্রতি আপনার উবুদিয়্যাহ এর সমতা। কেবল পুরুষ বলেই কোনো পুরুষ কখনোই নারীদের থেকে অধিক উত্তম ইবাদতকারী নয়। এটাই হল সত্যিকার সমতা। পবিত্র কুরআনে এটি অতি সুস্পষ্ট।
পরবর্তী আয়াতাংশে আল্লাহ বলছেন,
بَعْضُكُمْ مِّنْۢ بَعْضٍۚ
“তোমরা প্রত্যেকে একজন অন্যজন থেকে এসেছো” বা “তোমরা একে অপরের অংশ”।(সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং-১৯৫)
অর্থাৎ প্রত্যেক পুরুষ নারী ও পুরুষ (পিতা-মাতা) থেকে এসেছে, প্রত্যেক নারীও নারী ও পুরুষ (পিতা-মাতা) থেকে এসেছে। এটা আল্লাহ প্রদত্ত্ব সমতা। আপনি কিভাবে একজন আরেকজনের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারো? তোমরা প্রত্যেকেই তোমাদের পিতা-মাতা থেকে অর্থাৎ নারী ও পুরুষ জোড়া থেকে এসেছ। তোমরা একজন আরেকজনের নিকট প্রয়োজনীয়।
এরপর বলা হচ্ছে,
فَالَّذِیْنَ هَاجَرُوْا وَ اُخْرِجُوْا مِنْ دِیَارِهِمْ وَ اُوْذُوْا فِیْ سَبِیْلِیْ وَ قٰتَلُوْا وَ قُتِلُوْا لَاُكَفِّرَنَّ عَنْهُمْ سَیِّاٰتِهِمْ وَ لَاُدْخِلَنَّهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُۚ
“সুতরাং যারা হিজরত করেছে এবং যাদেরকে তাদের ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়েছে এবং যাদেরকে আমার রাস্তায় কষ্ট দেয়া হয়েছে, আর যারা যুদ্ধ করেছে এবং নিহত হয়েছে, আমি অবশ্যই তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতিসমূহ বিলুপ্ত করে দেব এবং তাদেরকে প্রবেশ করাবো জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত হচ্ছে নহরসমূহ”। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং-১৯৫)
অত্র আয়াতে ৫ টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে-
এক. যারা হিজরত করেছে
দুই. যাদেরকে তাদের ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়েছে
তিন. যাদেরকে আমার রাস্তায় কষ্ট দেয়া হয়েছে
চার. যারা যুদ্ধ করেছে
পাঁচ. যারা নিহত হয়েছে
এখন, আপনাদের সাথে আমার সত্যবাদী হতে হবে। আমি সূরা আলে ইমরান তিলাওয়াত করি ১১ বছর বয়স থেকে। এটা মুখস্ত করি যখন আমার বয়স ১৩-১৪ বছর ছিল। আর এ আয়াতসমূহ নাযিলের ব্যাপারে উম্মে সালামা (রা.) এর হাদীস, “এ আয়াত আমার ব্যাপারে নাযিল হয়েছে” পড়েছি ১৭-১৮ বছর বয়সে। আজকে আমি উম্মে সালামা (রা.) জীবনী আলোচনার জন্য রিসার্চ করছিলাম, তখন হঠাৎ চমৎকার একটা বিষয় আমার দৃষ্টিগোচর হল। যে পাঁচটি বিষয় এ আয়াতে উল্লেখ আছে, ঠিক এগুলোর দ্বারাই উম্মে সালামা (রা.) কষ্ট ভোগ করেছেন। এর আগে কখনোই আমি এটি সম্পর্কযুক্ত করতে পারি নি। সুবহানাল্লাহ! এটি এতদিন আমার মাথায় ধরে নি! বিষয়টি যেন আমার বিশ্বাসই হচ্ছিল না। আমি আয়াতটি পড়েছি, হাদীসটি জানা ছিল, কিন্তু আজকের আগে আমি তাদাব্বুর করি নি। এ বিষয়টি আপনাদের কাছে স্বীকার করছি। আমি খুবই দুঃখ অনুভব করছি। এটি সুস্পষ্ট ছিল, কিন্তু মাত্র আজকেই আমি তা বুঝলাম। এ আয়াতটি আসলে উম্মে সালামা (রা.) এর সংক্ষিপ্ত জিবনী-
এক. “যারা হিজরত করেছে” -উম্মে সালামা (রা.) আবিসিনিয়ায় হিজরত করেছেন। এরপর হিজরত করেছেন মদিনায়।
দুই. “যাদেরকে নিজেদের ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়েছে” -তাকেও তো বের করে দেয়া হয়েছিল!
তিন. “যাদেরকে আমার রাস্তায় কষ্ট দেয়া হয়েছে” -নিপীড়ন! তাকে তার স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তার ছোট্ট সন্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তিনি এতে যন্ত্রণা ভোগ করেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
চার. “যারা যুদ্ধ করেছে” -তার স্বামী জিহাদের মহদানে যুদ্ধ করেছেন।
পাঁচ. “যারা নিহত হয়েছে” -তার স্বামী জিহাদের ময়দানে আহত হয়ে পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
দেখা যাচ্ছে, তার জীবনের সমগ্র ঘটনাবলী এ আয়াতে সংক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ করার মাধ্যমে তার জবাব দেয়া হয়েছে। পবিত্র কুরআনে প্রকাশিত এ বিষয়টি উম্মে সালামা (রা.) এর মর্যাদা ও সম্মানের দৃষ্টান্ত।
আমি আবারও স্বীকার করছি, এভাবে আমি কখনোই চিন্তা করি নি। যদিও আমি ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে হাদীসটি জানতাম। আমি পবিত্র কুরআন ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে জানি। এই কয়েক ঘন্টা আগেই এটা আমার মাথায় আসল! আসলে আমরা কত দুর্বল, এটিই তার প্রমান। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন! সুবহানাল্লাহ! কিন্তু এটাই বাস্তবতা। আমরা কুরআনের তাদাব্বুর করি না। যেমন ভাবে আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা কি কুরআনের তাদাব্বুর করো না?” আমি কেবল আজকেই এ বিষয়টি উপলব্ধি করলাম। মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে। মনে হল, আমি যেন এ আয়াত প্রথম বারের মত পড়ছি। আজকে উম্মে সালামা (রা.) এর পুরো জীবনী একসাথে করার আগ পর্যন্ত এটা আমি উপলদ্ধি করি নি। আজ এটা আমার মাথায় এসেছে। সুবহানাল্লাহ! যাইহোক, আমি আল্লাহর কাছে আরো ফাহম ও তাদাব্বুর প্রার্থনা করি। আসলে ‘শিক্ষা’ এমন এক সফর, যা শেষ হবার নয়। আপনার শিক্ষা সমাপ্ত হবার নয়। এটাই পয়েন্ট, আমি ৩ দশক ধরে, প্রায় ৪ দশক ধরে এ আয়াত জানতাম, এ হাদীস জানতাম। কিন্তু আজকে তার জীবনী প্রস্তুত করার আগে কখনো এভাবে চিন্তা করতে পারি নি।
যাহোক, এ ছিল উম্মে সালামার প্রশ্ন সম্পর্কিত দ্বিতীয় ওহী।
এখন, আমাদের বুঝার জন্য মূল বিষয় হল, সমতা হল আধ্যাত্মিক, আখিরাতকেন্দ্রিক। জেন্ডার রোল হল ভিন্ন ভিন্ন। আর এটি উম্মে সালামা (রা.) এর প্রশ্নের তৃতীয় ঘটনায় জানা যায়। তিনি আরো একটি প্রশ্ন করেছিলেন অর্থাৎ তৃতীয় প্রশ্ন।
মুজাহিদ ইবনে জাবের বলেন, নবিজি (সা.) কে উম্মে সালামা (রা.) জিজ্ঞেস করলেন,
– “ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের নারীদের জন্য জিহাদে যাওয়া নিষিদ্ধ, কিন্তু পুরুষদের অনুমতি আছে। আর যখন উত্তরাধিকার সম্পদের ব্যাপার আসে, আমরা কেবল অর্ধেক পাই, পুরুষের তুলনায়।”
এখন, এখানে তিনি কি বলতে চাচ্ছেন? তিনি বলতে চাচ্ছেন, আমাদের অর্থ সম্পদের উৎস পুরুষের তুলনায় কম। তা কিভাবে? গনীমত! হ্যা, এটাই। গনীমত হল অর্থ সম্পদ উপার্জনের অন্যতম প্রধান উৎস। তিনি বলতে চাচ্ছেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এটা আমাদের দোষ নয় যে আমরা জিহাদে যেতে পারি না। শরীয়াহ আমাদের বলেছে, তোমরা যেতে পারবে না। খালাস! আমরা যেতে পারব না। কিন্তু আমাদেরও তো অধিক অর্থ সম্পদ অর্জনের প্রয়োজন আছে। তিনি আসলে আক্ষরিকভাবে এটা বলেন নি। কিন্তু তিনি যেভাবে বলেছেন, তার মর্মার্থ এটাই। তিনি বলেছিলেন,
“পুরুষ জিহাদে যেতে পারে, আমরা যেতে পারি না। এবং উত্তরাধিকারের বন্টনে আমরা অর্ধেক পাই (পুরুষের তুলনায়)।”
এখন, এ প্রশ্নের ব্যাপারে আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত জবাব উল্লেখের পূর্বে একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই,
এটা আপনাকে আসলেই দেখাবে নীতি-নৈতিকতা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভিন্ন ভিন্ন হয়। উম্মে সালামা (রা.) এ বিষয় দুটিতে (জিহাদে যাওয়া, গনীমত পাওয়া) দৃষ্টিপাত করে বলছেন, আমরা জিহাদে যেতে পারি না (অনুমতি নেই), এবং উত্তরাধিকার অর্ধেক পাই।
অপরদিকে এই দুটি বিষয়ে ফোকাস করে পুরুষ সাহাবারা প্রশ্ন করেছিলেন, “নারীরা কেন আমাদের তুলনায় অর্ধেক উত্তরাধিকার সম্পদ পাবে?” ঠিক এ দুটি বিষয়ই তারা উল্লেখ করেছিল। তাবারীসহ অন্যান্য স্কলারগণ বর্ণনা করেন, উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আয়াত নাযিল হলে সাহাবারা বলল,
“ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরাই তারা, যারা যুদ্ধ করতে যাই। নারীরা তো যায় না। তার কিভাবে উউত্তরাধিকার সম্পদ আমাদের তুলনায় অর্ধেক পেতে পারে?”
পুরুষ সাহাবীরা তাদেএ তুলনায় নারীদের অর্ধেক পাওয়াকে বেশি মনে করছেন। চিন্তা করুন! ভাবুন! নারী ও পুরুষ, উভয়ই একই বিষয় পর্যবেক্ষণ করেছে এবং তারা একদম পরস্পর বিপরীত দুটি যুক্তি উপস্থাপন করেছে। এটাই হল নীতিবিদ্যা ও নৈতিকতার আসল বাস্তবতা। আপনি যেকোনো কোনা থেকে যৌক্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারবেন।
আজকের নৈতিকতার দিকে তাকান। যৌনতা সম্পর্কিত চলমান নৈতিকতার দিকে তাকান। আপনি যেমন চান, তেমন যুক্তি দিতে পারবেন। আর তা নিজ নিজ দিক থেকে সঠিক মনে হবে। আমি কি বলছি তা আপনারা বুঝতে পারছেন?
একই ইস্যুতে নারীরা একদিকে, পুরুষরা একদিকে। তারা একই বিষয় দেখছে, তারা জিহাদ ও গনীমতের বিষয়টি বিবেচনা করছে; আর দেখুন তারা কেমন পরস্পর বিপরীত যুক্তি উপস্থাপন করল। আর এজন্যই আপনার একজন উচ্চতর কর্তৃত্ববান প্রয়োজন, যিনি মিথ্যা থেকে সত্যকে আলাদা করে আপনার নিকট উপস্থাপন করবেন। ভুল ও সঠিক নির্ণয় করবেন। আমাদের সীমাবদ্ধ বুদ্ধি যেকোনো কিছুকে ভিত্তি করে যুক্তিতর্ক পেশ করতে পারে (কিন্তু অনেক সত্যই উদঘাটন করতে পারে না) ।
আমরা মুসলিমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নৈতিকতার মানদণ্ড আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। আর অনেক আধুনিক দার্শনিক, নিৎশেসহ আরো অন্যান্যরা বলে থাকেন, “ঈশ্বর ব্যতীত কোনো নৈতিকতা নেই।” অনেক বিখ্যাত দার্শনিক বলেন, “আপনি যখন ঈশ্বরকে কোন প্রেক্ষাপট থেকে সরিয়ে দেবেন, সেখানে কোনো নৈতিকতা থাকবে না।”
যাইহোক, আমরা আলোচনায় ফিরে যাই। উম্মে সালামা (রা.) এর উত্তরাধিকার সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে কোন আয়াত নাযিল হয়েছিল?
وَ لَا تَتَمَنَّوْا مَا فَضَّلَ اللّٰهُ بِهٖ بَعْضَكُمْ عَلٰى بَعْضٍؕ لِلرِّجَالِ نَصِیْبٌ مِّمَّا اكْتَسَبُوْاؕ وَ لِلنِّسَآءِ نَصِیْبٌ مِّمَّا اكْتَسَبْنَؕ وَ سْــٴَـلُوا اللّٰهَ مِنْ فَضْلِهٖؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمًا
-“আর তোমরা সেসব বিষয়ের আকাঙ্ক্ষা করো না, লোভ করো না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের এক জনকে অন্য জনের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। পুরুষদের জন্য রয়েছে অংশ, তারা যা উপার্জন করে তা থেকে এবং নারীদের জন্য রয়েছে অংশ, যা তারা উপার্জন করে তা থেকে। আর তোমরা সকলেই, নারী পুরুষ উভয়ই, আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ চাও। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।” (সূরা নিসা আয়াত নং- ৩২)
আল্লাহর কাছে চান। আল্লাহ আপনাকে অন্য কোনোভাবে সন্তুষ্ট করবেন। সন্তুষ্ট হওয়ার জন্য অর্থ সম্পদই সব নয়। সম্ভবত নারীরা অন্য কোনো মাধ্যমে সন্তুষ্টি পাবে, পরিবার, সন্তানাদির মাধ্যমে বা অন্য যেকোনো বৈধ উপায়ে। সম্ভবত অন্য কোনোভাবে সুখ সাচ্ছন্দ্য করবে। এজন্যই আল্লাহ বলছেন,
وَ سْــٴَـلُوا اللّٰهَ مِنْ فَضْلِهٖؕ
-“যাও! আল্লাহর কাছে ফযল প্রার্থনা করো।”
লক্ষনীয় যে আল্লাহ এ আয়াতে বলেন নি, তোমরা সমান। তিনি বলেছিলেন হিজরত, খুশু, যিকর, সাদাকাহ.. এসবের সওয়াব প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ সমান। কিন্তু যখন এটি অর্থনৈতিক কারবার, দুনিয়ার কোনো বিষয়; সেক্ষেত্রে আল্লাহ বলেন, দেখ! পুরুষ ও নারী আলাদা। আর এটাই আসল নারী অধিকার। আধুনিক পশ্চিমা পণ্ডিতরা যেসব নিয়ে নাড়াচাড়া করছে সেটা নয়। এটা পশ্চিমা ভার্সন, যা তারা পবিত্র কুরআনের উপর চাপিয়ে দিতে চায়। নারী ও পুরুষ সমান, পবিত্র কুরআন এটা বলে না। এক্ষেত্রে তাদেরকে পবিত্র কুরআনের বক্তব্যকে ঘুরিয়ে পেচিয়ে ভিন্ন অর্থ বের করতে হবে বা বিকৃত করতে হবে। অথবা কুরআনের বক্তব্যকে খোলাখুলিভাবে প্রত্যাখ্যান করতে হবে, যেমনটা তাদের প্রধান প্রধান ব্যক্তিরা পুরোপুরিভাবে করছেন। এজন্যই আমি তাদের সাথে এটা নিয়ে আলোচনা করতে চাই না। তারা ইবরাহীম (আ.) এবং অন্যান্যদের নিয়ে যে ভাষা ব্যবহার করেন তাতে আমি খুব হতাশ হয়ে পড়ি। তাদের এ ভাষা ব্যবহারের বিষয়গুলো সুপরিচিত। তারা তাদের ঈমান ও তারা যা করছে সেসব বিষয়ে আল্লাহর কাছে হিসাব দিবেন।
তবে আমি এখানে যৌক্তিক পয়েন্টগুলো উল্লেখ করেছি। আপনি যদি কুরআনের বার্তা গ্রহণ না করেন, তাহলে এভাবে প্রত্যাখ্যান করতে করতেই আপনি শেষ হয়ে যাবেন। আর এটাই বাস্তবতা। যাহোক, আমি ফেমিনিজম ইস্যু নিয়ে আলোচনা এখানেই শেষ করতে চাই। আমাদের বক্তব্য সুস্পষ্ট, এসব ঘটনা (তার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও আল্লাহ কর্তৃক উত্তর) এবং এসবে তার প্রতিক্রিয়া উপস্থাপন না করে উম্মে সালামা (রা.) এর বক্তব্য আমাদের নিকট উদ্ধৃত করবেন না। তিনি কুরআনের আয়াত নাযিলের পর কোনো ধরণের আপত্তি করেন নি। কাহিনি শেষ! তিনি আল্লাহর জবাবে সন্তুষ্ট ছিলেন। এটাই আসল ইসলামিক ফেমিনিজম, “আমরা শুনলাম এবং আনুগত্য করলাম।” (সূরা বাকারা, আয়াত নং-২৮৫)।
আপনাদের যদি এরপরও প্রশ্ন করতে মন চায়, করুন! এর জবাবে আল্লাহ কি বলেছেন তা দেখুন। আমি তো নিজের বক্তব্য বলছি না। এগুলো আল্লাহরই বক্তব্য। তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, নারী ও পুরুষ আধ্যাত্মিকভাবে (spiritually) সমান। তারা উভয়ই জান্নাতে যাবার জন্য সমান সামর্থ্য রাখে। কিন্তু দুনিয়াবি বিষয়ে নারী-পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব, সুযোগ ও অধিকার ভিন্ন। এখানে প্রতিযোগিতা নয়। তাদের দায়িত্ব ভিন্ন ভিন্ন। তারা একে অপরের জন্য পরিপূরক। এ পদ্ধতিতেই সমাজ অধিক উত্তমভাবে পরিচালিত হবে। নারী ও পুরুষ প্রতিপক্ষ নয়। তারা একই টিমের। এটা টিমের নাম ‘পরিবার’। আপনারা একসাথে কাজ করবেন।
প্রত্যেকের পালন করার জন্য নিজস্ব দায়িত্ব রয়েছে। আর আল্লাহই এগুলো সব থেকে বেশি জানেন। হ্যা! আল্লাহই সবথেকে বেশি জানেন যে নারীর জন্য কতভাগ সম্পদ উত্তম আর পুরুষের জন্য কতভাগ সম্পদ উত্তম।
সুতরাং, আমরা বুঝতে পারলাম, দুনিয়ার কোনো বিষয়ে জেন্ডার সমান নয়। বলা হচ্ছে,
وَ لَیْسَ الذَّكَرُ كَالْاُنْثٰىۚ
-“পুরুষ কখনো নারীর মত নয়”। (সূরা আলে ইমরান, ৩৬)
اَلرِّجَالُ قَوّٰمُوْنَ عَلَى النِّسَآءِ
-“পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্ববান”। (সূরা নিসা, আয়াত নং-৩৪)
وَ لِلرِّجَالِ عَلَیْهِنَّ دَرَجَةٌؕ
-“আর পুরুষদের তাদের উপর একটা মর্যাদা রয়েছে” (সূরা বাকারা, আয়াত নং-২২৮)
পবিত্র কুরআন পাঠ করলে আপনি কোনোভাবেই থার্ড ওয়েভ বা পোস্ট মডার্নিস্ট ফেমিনিস্ট হতে পারবেন না। আপনি পবিত্র কুরআন ও এ ধরণের ফেমিনিজম -এ দুটি একইসাথে গ্রহণ করতে পারবেন না। কেননা এ দুটি পরস্পর বিপরীত।
ফেমিনিজম সংক্রান্ত আলোচনা এখানে এতটুকুই যথেষ্ট। যারা আয়িশা (রা.) , উম্মে সালামা (রা.) ও খাদিজা (রা.) কে ফেমিনিজমের আদর্শিক আইকন হিসেবে উদ্ধৃত করে, তারা এ মহিয়সী নারীদের জীবনীই অধ্যয়ন করে নি, অনুসরণ তো দূরের কথা।
আয়িশা (রা.) কে অনুকরণ করুন, উম্মে সালামা (রা.) এর মতো তাকওয়াবান ও ঈমানদার হোন। তাহলেই সম্মানিত হবেন। তাদের জীবন থেকে আপনার সুবিধামত একটা দুটো জিনিস নিয়ে বিকৃত উপস্থাপন করবেন না। তাদের জীবনের বাকি অংশগুলোকে এড়িয়ে যাবেন না। তাঁরা আপনার ফেমিনিজম ভার্সনের মত ছিলেন না। তারা সত্যিকারার্থেই মহান আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) এর প্রতি বিশ্বাসী ছিলেন। তারা নিজেদের জীবনে নারীত্বকে (femininity) বাস্তবায়ন করেছেন, নারীবাদকে (feminism) নয়।