ইহুদিবাদী ইসরাইলের দৈনিক হারেৎজ এক নিবন্ধে এই অবৈধ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নির্মূল বা বিলুপ্তির পথে রয়েছে বলে স্বীকার করেছে। দৈনিকটির এক শিরোনামে লেখা হয়েছে, ইসরাইল তার শেষ নিঃশ্বাসগুলো নিচ্ছে।
অরি শিবিত নামের একজন বিখ্যাত ইসরাইলি লেখক এই নিবন্ধে মত প্রকাশ করেছেন যে দৃশ্যত আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ বা অনমনীয় জাতির মুখোমুখি হয়েছি। তাদের সঙ্গে সংকট সমাধানের একমাত্র যে পথ বাকি আছে তা হল তাদের অর্থাৎ ফিলিস্তিনিদের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া ও সেখানে দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো। ইসরাইল নিজেকে সংশোধনের সুযোগও হারিয়ে ফেলেছে বলে ইঙ্গিত দিয়ে ওই লেখক এই মত প্রকাশ করেছেন যে, ইসরাইলে থাকা এখন মূল্যহীন বা অর্থহীন, বরং যেখান থেকে ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনে এসেছিল এখন ইসরাইল ছেড়ে সেইসব দেশে ফিরে যাওয়াই তথা জার্মানি, ফ্রান্স ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়াই ইসরাইলিদের জন্য উত্তম।… ইসরাইল এখন তার অন্তিম নিঃশ্বাসগুলো নিচ্ছে।
ইহুদিবাদীরা নিরাপদ ইহুদি রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিশ্বের নানা অঞ্চল থেকে ইহুদিদেরকে ফিলিস্তিনে জড়ো করে তাদের ধোঁকা দিয়েছে বলে ইসরাইলি এই লেখক উল্লেখ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে দখলদার ইহুদিবাদীদের ওপর ফিলিস্তিনিদের শাহাদাত পিয়াসী বেশ কয়েকটি হামলার দিকে ইঙ্গিত করে এই ইসরাইলি লেখক আরও লিখেছেন, ইহুদিবাদী আন্দোলনের মিথ্যাচার বা ধোঁকাবাজির অভিশাপ ফিলিস্তিনিদের হাতে ছুরি হয়ে ও পাথর হয়ে ও গাড়ির আঘাতের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের নানা অঞ্চলে ইসরাইলিদের ওপর আঘাত হানছে। … ফলে ইসরাইলিরা এখন বুঝতে পারছে যে ফিলিস্তিনে তাদের কোনো স্থান নেই। ফিলিস্তিন জাতিবিহীন রাষ্ট্র বা দেশ নয়, বরং আমরা এখানে দখলদার!
ইসরাইলের ওই লেখক ফিলিস্তিনি সংগ্রামীদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের সবগুলো দমননীতি, অবরোধ, অনৈতিক যৌন-প্রলোভন ও কূটকৌশলের ব্যর্থতার ইঙ্গিত দিয়ে লিখেছেন: সব ধরনের কূটকৌশল, দমন-পীড়ন, ধ্বংসযজ্ঞ ও অবরোধ সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিরা ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেট বানিয়ে এখন আমাদের ওপর হামলা করছে এবং কাঁটাতারের বেড়া ও দেয়াল দিয়ে ফিলিস্তিনিদের অবরুদ্ধ করা সত্ত্বেও তারা মাটির নীচ দিয়ে সুড়ঙ্গ কেটে আমাদের কাছে আসছে। তারা সাম্প্রতিক যুদ্ধে আমাদের ওপর কঠোর আঘাত হেনেছে। … মোট কথা আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে অনমনীয় বা ইস্পাত-কঠিন দৃঢ়তার অধিকারী জাতির মুখোমুখি হয়েছি এবং দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়ে ফিলিস্তিনিদের অধিকার মেনে নেয়া ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো উপায় নেই।
হারেৎজ-এর নিবন্ধে এমন সময় এইসব মতামত প্রকাশ করা হল যখন কোনো কোনো সেবাদাস আরব সরকার ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে এবং ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংগ্রাম ক্রমেই জোরদার হয়ে উঠছে পশ্চিম তীর অঞ্চলে। এ ছাড়াও ফিলিস্তিনের সংগ্রামী দল হামাস সম্প্রতি চারটি নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। পশ্চিম তীরের জেনিনেও ইহুদিবাদী সেনা অভিযোনের মোকাবেলায় ফিলিস্তিনিরা বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে বলে খবর এসেছে।