ইরানে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর ইরান
Advertisements

ইরানের রাজধানী তেহরানে পৌঁছেছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান। চীনের মধ্যস্থতায় ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান এবং সৌদি আরব ১০ মার্চ বেইজিংয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুৃনঃস্থাপন করতে এবং দুই মাসের মধ্যে দূতাবাস ও কূটনৈতিক মিশন পুনরায় চালু করতে সম্মত হয়েছিল।

তারপর থেকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান এবং সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান একবার বেইজিংয়ে এবং দ্বিতীয়বার কেপটাউনে সাক্ষাৎ করেন এবং সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে তিনি শীঘ্রই তেহরান সফর করবেন। এই সময়ের মধ্যে ইরান এবং সৌদি আরব দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত আঞ্চলিক এবং এর বাইরে ভূরাজনৈতিক সমীকরণে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে।

তারপর থেকে রিয়াদ ইরানের মিত্র হিসেবে সিরিয়ার সাথে তার সম্পর্ক পুনরায় শুরু করেছে এবং ইয়েমেনি সরকারের বিদ্যমান সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে আলাপ আলোচনা শুরু করেছে। একই সাথে এই অঞ্চলের আরব দেশগুলো ইরানের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এছাড়া বিভিন্ন চ্যানেল যেমন ইরাক ও ওমানের মাধ্যমে মিশর ও বাহরাইনের সাথে ইরানের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চলছে।

এই ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বিষয়ের বিশেষজ্ঞ হাসান হানিজাদেহ বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের সাত বছর পর সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তেহরানে সফর আঞ্চলিক ঐক্য ও সংহতি তৈরিতে সৌদি আরবের নতুন নীতির প্রতি ইঙ্গিত বহন করছে। সৌদি আরব বিগত বছরগুলোতে বিশেষ করে ইরানের সঙ্গে উত্তেজনার সময় ব্যাপক আর্থিক ও মানবিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরব ৩৫০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে এবং সিরিয়া সঙ্কটে বিদেশী মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে ৮০ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। যদিও এসব আর্থিক সহায়তা ছিল সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর নির্দেশে।

এটা স্পষ্ট যে বিশ্বের দু’টি বৃহৎ তেল উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে এবং দু’টি গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম দেশ হিসেবে ইরান ও সৌদি আরব দুই দেশের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক জোট গঠনের পাশাপাশি এ অঞ্চলে তারা স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে পারে এবং সিরিয়ার এবং ইয়েমেন সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এদিকে, ইরান ও সৌদি আরবসহ এ অঞ্চলের আরব দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের উন্নতিকে ইরানকে বিচ্ছিন্ন করার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর নীতির ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইরানকে রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর ইরানবিরোধী কৌশলগুলির মধ্যে একটি,যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে তারা জোরালোভাবে অনুসরণ করার চেষ্টা করেছে৷ এই ইস্যুটি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে এমনকি ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতাও মাশহাদে তার নওরোজ ভাষণে তারা উল্লেখ করেছেন। তিনি তার ভাষণে বলেছিলেন, পশ্চিমারা ইরানকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য সর্বোচ্চ চাপের নীতি অনুসরণ করেছিল কিন্তু এতে উল্টো ফল হয়েছে অর্থ্যাৎ ইরানের সঙ্গে বিশ্ব সমাজের সম্পর্ক দিন দিন বেড়েই চলেছে।

Advertisements