ইতালির মধ্যাঞ্চলীয় শহর চিভিটানোভা মারকা’য় একজন অভিবাসী নাইজেরীয় নাগরিককে প্রকাশ্য দিবালোকে কিলঘুষি মেরে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক জনরোষ দেখা দিয়েছে। গত শুক্রবার (২৯ জুলাই) ইতালির একজন শ্বেতাঙ্গ নাগরিক ওই নাইজেরীয় যুবককে প্রথমে লাঠি দিয়ে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেয় এবং এরপর এলোপাথাড়ি কিলঘুষি মেরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে।
একজন পথচারী তার মোবাইল ফোন দিয়ে পুরো হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। তবে তিনি হতভাগ্য নাইজেরীয় যুবককে রক্ষা করতে এগিয়ে যাননি। এছাড়া, ঘটনার সময় আরো লোকজন সেখানে উপস্থিত থাকলেও কেউ ওই বর্বর শ্বেতাঙ্গকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেনি।
ইতালির পুলিশ বলছে, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৩২ বছর বয়সি যুবককে আটক করা হয়েছে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর ভিডিও ধারণকারী ব্যক্তি হতভাগ্য অভিবাসীকে বাঁচাতে এগিয়ে না যাওযায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
নিহত ৩৯ বছয় বয়সি ব্যক্তির নাম অ্যালিকা ওগোরচুকুয়া। তিনি রাস্তায় ফেরি করে বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করতেন।তার স্ত্রী চ্যারিটি উরিয়াচি প্রথমবার তার স্বামীর লাশ দেখার মুহূর্ত বর্ণনা করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, পুলিশ তাকে ফোন করে এনে সাদা কাপড়ে ঢাকা লাশটি দেখায়।
ইতালির একাধিক রাজনৈতিক নেতা এই হত্যাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন। দেশটির বামপন্থি ডেমোক্র্যাটিক দলের নেতা এনরিকো লিটা এই হত্যাকাণ্ডকে ‘হতাশাজনক’ উল্লেখ করে বলেন, এই নজিরবিহীন পাশবিক ঘটনার সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা যে নির্লিপ্ততা দেখিয়েছে তা ব্যাখ্যা করার কোনো সুযোগ নেই।
ডানপন্থি রাজনৈতিক নেতা মাতিউ সালাভিনি এই হত্যাকাণ্ডর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “জনগণের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে গায়ের রংয়ে পার্থক্য করা যাবে না বরং প্রতিটি নাগরিককে নিরাপত্তা পাওয়ার জন্মগত অধিকার ভোগ করতে দিতে হবে।” অবশ্য এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ইতালির সরকার বা কোনো পদস্থ সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।