illuminated
Advertisements

বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ যাকে উইকিপিডিয়ায় মূল ব্যক্তিত্ব বলে পরিচয় দেয়া আছে। আবু সায়ীদ সাহেবকে নিয়ে আমার কোন সমস্যা নাই কেবল একটা ছাড়া। আমার ঢাকায় আসা (১৯৭৯) ও বুয়েটে ভর্তি হবার কালে তার উত্থান যখন তিনি ঢাকা কলেজের শিক্ষকতা থেকে অবসর বা ছেড়েছেন বা ছাড়ার পথে। কিন্তু তার ততপরতার উদ্দেশ্য বুঝতে আমার সময় লেগেছে; কারণ তখনও আমি আলোকিত শব্দের আসল অর্থ বুঝি না। বরং তখন কমিউনিস্ট করি ফলে না বুঝলেও ইতিবাচকই মনে হত। কেবল সেকালে তিনি কেন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র গড়তে গিয়ে লিভার ব্রাদার্স এই বহুজাতিক কোম্পানির ডোনেশন নিয়েছিলেন এনিয়ে তর্কে আমার লোকটার সম্পর্কে নেতি ধারণা হয়েছিল।

সে যাক, কিন্তু গত কয়েকদিন সোশাল মিডিয়ায় তাঁর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নিয়ে অবস্থান-বক্তব্য ছাপা হচ্ছে। এটা পীড়াদায়ক! তাঁর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র নিয়ে ব্সযস্বত থাকা জীবনের সবচেয়ে বড় অপরাধ হল ইসলাম-বিদ্বেষ! এটা অনেকটা হুমায়ন আজাদ, জাফর ইকবাল ধরণের শিক্ষকদের যে মিথ্যা অনুমানের উপর দাঁড়ানো অবস্থান যে তারা সবাই এনলাইটেনমেন্ট লোক। ইংরাজি enlightenment শব্দের বাংলা তারা করেন আলোকিত। শব্দটা ইংরাজি enlightenment শব্দটার কলকাতায় করে নেয়া বাংলা। এর চেয়েও বড় পরিচয় এই শব্দকে আপন করে দিবার প্রধান উদ্দেশ্য ইসলাম (বা ধর্ম) কোপাও! কারণ, তাদের দাবি ইসলাম ধর্ম হল পশ্চাতপদ! তাই ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে বিজ্ঞান এর পথে আসো। স্কুল বা যেকোন হায়ার স্টাডিতে যতই বিজ্ঞান পড়বা ততই তোমরা ধর্মবিমুখ হইবা। কারণ, বিজ্ঞান নাকি উচ্চমার্গের জ্ঞান!

যদিও এই অতি বিজ্ঞাননাদিতার মুল সুরসুরিদাতা হল বাংলার জমিদার-হিন্দুরা। কারণ তারা মনে করে জমিদারি ব্যবস্থা উচ্ছেদের পক্ষে তুলনায় মুসলমানেরা বেশী সোচ্চার, অথচ হিন্দু প্রজারা একেবারেই না। মনে রাখতে হবে ১৮১৮-১৯ সাল থেকেই হাজি শরীয়তুল্লাহ জমিদারবিরোধী আন্দোলন শুরু করে দিয়েছেন। পরে তিতুমীরও তাই উত্তর চব্বিশ পরগণা কাঁপিয়েছিলেন! এর বিস্তারিত নিচে পাবেন।

এখন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ কে নিয়ে যে প্রশ্ন ও জবাবদীহিতা চাইবো তা হল, ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের সাথে আপনার খাতিরটা কেন? হাইকমিশন, বাতিঘর পাবলিশার্স (যাকে মাথার উপরে দোকান করতে দিয়েছেন), শিক্ষামন্ত্রণালয়ের এক বিশেষ বিভাগ ও প্রকল্প ইত্যাদি এর এই র‍্যাকেটটা কী এবং কেন খুলে ছিলেন? তরুণদের বই পড়াবেন ভাল কথা – কিন্তু ভারতীয় হাইকমিশনের সাথে এই ঢলাঢলিটা কেন? আলোকিত করবেন ভারতীয় হাইকমিশনের তত্বাবধানে? বাংলাদেশের মুসলমান তরুণদের আলোকিত করবেন ভারতীয় হাইকমিশনের তত্বাবধানে? আর একাজ চালিয়ে দিবেন জঙ্গীবাদবিরোধী ততপরতা হিসাবে? আর ঐ প্রকল্পের অর্থ লুটতে বাতিঘর বই বেঁচবে? বাতিঘরকে আবার রাখাল বালক গভর্নর থেকে বিনাসুদে ব্যাংক লোন নিবে? কী বিশাল আপনাদের আত্মসাত চক্র তাই না? আবার খাসা এক ইসলাম কোপানোর চক্র মানতেই হয়!

আমি জানি ৭ জানুয়ারি ২০২৪ নির্বাচনের পরে নয়া শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের সাথে দেনা-পাওনার ঝগড়ায় আপনারা ঐ প্রকল্প থেকে সরে আসেন। কিন্তু আগের গুলা সম্পর্কে বলেন, জবাবদীহিতা করেন?

১। জঙ্গীবাদের সাথে বই পড়ানোর কী সম্পর্ক?
২। বিজ্ঞান পড়লে জঙ্গীবাদ কমবে কেন, কী সম্পর্ক?
৩। বিজ্ঞানবাদিতা দিয়ে আপনি ধর্মতত্বকে পরাস্ত করবেন?

এগুলোর একটাই উত্তর যে, একমাত্র কোন স্টুপিড চিন্তাই এমন ভাবতে পারে! আপনার ইসলাম বা কোন ধর্ম মানতে বা পালন করতে ইচ্ছা করে না তো করেন না। কোন বাধ্যবাধকতা নাই, সেটা আপনার স্বাধীনতা। কিন্তু ইসলামবিদ্বেষ আর সাথে হিন্দুত্ববাদের দালালি বা জমিদারি হারানো জমিদার-হিঁদুর জমিদারি ফেরত পাবার না হলেও কিছু সামাজিক-কালচারাল আধিপত্য ফেরত পাবার প্রকল্প থেকে একদম সরে থাকবেন। সের দালালিতে জড়াবেন না। জানেন তো ধর্ম-বিদ্বেষ ঘৃণা ছারানো এটা এথনিক টর্চার নিস্পেষণ – এটা জাতিসংঘের আইনে র্সবোচ্চ শাস্তি মানে যাবজ্জীবন কারাগার!

প্রথমত আপনি হলেন একজন হিন্দুত্ববাদী এই অর্থে ভারতের মোদি আরএসএস এর দালাল!
দুই, আপনি জানেনই না যে মানুষের “চিন্তারও পদ্ধতি” বলে ব্যাপার আছে। বিজ্ঞানের সাথে ধর্মতত্ব এদুইটার “চিন্তা পদ্ধতি” আলাদা। বিজ্ঞানের চিন্তা পদ্ধতিটা তুলনায় খাটো এই অর্থে যে তা কম বিষয় বা প্রসঙ্গ কাভার করে। যেটাকে আলোকিত বলছেন মানে enlightenment এটা কেবল বিজ্ঞানের চিন্তা পদ্ধতিটা আর সেটা এই অর্থে যে এটা কেবল লজিক্যাল বা র‍্যাশনাল ম্যাথড এর উপর দাঁড়ানো। নিউটনের গতিসুত্র এর উপর এটা ভাল কাজ করবে। কিন্তু মানুষ ব্যাখ্যা করতে এটা কাজ করবে না। কারণ, মানুষ কেবলই লজিক্যাল বা র‍্যাশনাল নয় সে আরো কিছু বিয়ন্ড [beyound]. ধর্মতাত্বিকদের ভাষায় তারা বলবে মানুষের এর বাইরে “গায়েবী” দিকও আছে। আমি জানি গায়েবী শুনে আপনার অস্বস্তি হবে। কারণ, আপনি স্টুপিড-চিন্তায় শিখেছেন বিজ্ঞানই সর্বোচ্চ জ্ঞান। আবার আপনি চিন্তারও যে ম্যাথড বলে কিছু আছে তা জানেন না তা জানি। হুমায়ন আজাদ, জাফর ইকবাল এমনকি তাদের সাগরেদ বুয়েটের ইলেক্ট্রনিক বিভাগের কিছু শিক্ষকও সাথে আছে যারা কেউ জানেনই না যে চিন্তারও ম্যাথড বলে কিছু আছে। এদের চিনবার চিহ্নটা হল, যারা ইসলাম বা ধর্ম কোপানো বিজ্ঞানবাদি অথচ এরা কেউই জানে না যে চিন্তারও ম্যাথড বলে ব্যাপার আছে। আসলে যাকে তারা বিজ্ঞান বলে জানে সেটা নিজেই আসলে এক চিন্তা পদ্ধতি – লজিক্যাল ও র‍্যাশনাল চিন্তা পদ্ধতি। আর এটা দিয়ে দুনিয়ার কেবলমাত্র যা ফিজিক্যাল ফেনোমেনা তা ভাল ব্যাখ্যা করতে ব্যবহার করা যায়।

কিন্তু মানুষ? মানুষ কেবল ফিজিক্যাল বস্তু বা ফেনোমেনা নয় সে একই সাথে স্পিরিচুয়াল [স্পিরিচুয়ালিটির দার্শনিক মানে করে নিয়েন]। তাই মানুষের যেকোন রিলেশন এর ফিজিক্যাল ব্যাখ্যা করা যাবে কিন্তু তা সম্পুর্ণ না। ওর স্পিরিচুয়াল (রিলেশনাল) দিকটা বাদ পড়ে থাকবে তাতে। নিজের স্ত্রী-সন্তানের সাথে আপনার সম্পর্ক এটাকে কেবল ফিজিক্যাল ভেবে থাকেন পশ্চিমের বেশির ভাগ মানুষ; ফলে, কানেকটেড [connected, সংযুক্ত বা সম্পর্কিত] ফিল করেন না কারো সাথে। ভাবেন লজিক্যাল কথা না শুনলে স্ত্রী-সন্তানকে বের করে দিবেন। আর এটারই পরিণতি LGBTQ. কিন্তু সেখানেও শান্তি কই?

আর প্রত্যেক থিওলজিতে তাই একটা আল্লাহ বা এর সমতুল্য যেমন গড বা ভগবানের ধারণা আছে কেন জানেন? থিওলজি বলে আমরা দুনিয়ার সবাই এই আল্লাহ এর মাধ্যমে (through GOD) বস্তু-অবস্তু প্রাণ প্রকৃতির সকলেই কানেকটেড। একারণে আপনাদের বিজ্ঞান অসম্পুর্ণ। কারণ সে বলে এনভায়রণমেন্ট বা পরিবেশ। অথচ আসলে সত্যিটা হল প্রাণ ও প্রকৃতি থাকতে হবে! কিন্তু প্রাণ কে ব্যাখ্যা করবেন কীভাবে? বিজ্ঞানের মুরোদ আছে?

সারকথায় এক বিজ্ঞান দিয়ে সব বুঝে ফেলবেন এই চিন্তাটা এটাই তো আসলে জমিদার-হিন্দুর চিন্তা। মুসলমান প্রজাদের পায়ে নিচে দাবায় রাখার জন্য।

বিশেষ করে পাকিস্তান কায়েম হয়ে যাবার পরে যখন জমিদারেরা টের পেলেন যে এবার তো জমিদারি ব্যবস্থা এই রুস্তমিটাই উচ্ছেদ হয়ে যাবে। তাই এই বিজ্ঞানবাদিতা, ইসলামবিদ্বেষ, কমিউনিস্ট পার্টিতে সন্তানদের যোগদান ইত্যাদি জোরেসোরে ঘটালেন।
যদিও ১৯৩৫ সাল প্রথম গোছানো কমিউনিস্ট পার্টি চালু হয়েছিল। তখনই তারা ইউরোপের রেনেসাঁ-এনলাইটেনমেন্ট আন্দোলনকে নিজের করে নিতে মানে ইসলাম কোপানোর উপযোগী করে নিতে আর নতুন নামকরণে (মানে শুধুই রেনেসাঁ বা ইউরোপের রেনেসাঁ নয়) নিজেরাই বই লিখেছিলেন যার নাম বেঙ্গল রেনেসাঁ।

যার সাথে রোম-ফ্লোরেন্স থেকে শুরু ও সারা ইউরোপে ছড়ানো ইউরোপের রেনেসাঁ-এনলাইটেনমেন্ট আন্দোলনের কোন সম্পর্ক নাই। মুল ফারাকটা হল, ঠিক খ্রীশ্চান ধর্মটা কোপাতেই হবে এটা তো ইউরোপের রেনেসাঁ না ছিল না। বরং নতুন করে চিন্তা করতে হবে (তাই নব জাগরণ যা রেনেসাঁর বাংলা অর্থ) – আগে অনেক অগ্রসর চিন্তা বাদ পরে বা চাপা পড়ে গেছে – এই ছিল তাদের মুলকথা।

একারণের তারা শুধু রেনেসাঁ না বলে বেঙ্গল রেনেসাঁ বলেছেন। আর বলেছেন বা হাজির করেছেন ধর্ম কোপানোর কথা বলে, ধর্ম পশ্চদপদ বলে। কিন্তু কোপায়েছেন কেবল ইসলাম কে মানে মুসলমানদেরকে তারা পশ্চাদপদ আর বাঙালি হিন্দুরা অগ্রসর-প্রগতিশীল এভাবে হাজির করেছেন।

বেঙ্গল রেনেসাঁ বইয়ের লেখক হলেন অধ্যাপক সুশোভন সরকার। যদিও লিখেছিলেন ছদ্ম নামে। তিনিই প্রথম কমিউনিস্ট পার্টির দলিল ড্রাফট করেছিলেন। আমাদের জগন্নাথ কলেজের আশেপাশের হিন্দুপাড়ায় বড় হয়েছিলেন, দ্বারকা-রবীন্দ্র ঠাকুরদের ব্রাহ্ম হিসাবে সেকালে। ইতিহাসের অধ্যাপক। তার এই বেঙ্গল রেনেসাঁ বইয়ের শুরুতে একটা পরিচয়পত্র জুড়ে দেয়া আছে যা লিখেছেন কমিউনিস্ট পার্টি প্রথম সম্পাদক পি সি যোশী মহাশয়। সারকথা হল, এটা যোশী সাহেব পার্টির দলিল হিসাবে গ্রহণ করাতে চান এর আগে সবাই যাতে পড়ে মতামত দেয়। বইটা ইংরাজিতে তবে গুগল পুরানা কপিরাইটহীন বিহীন বই হিসাবে ওয়েবে দিয়ে দিয়েছে, নামিয়ে নিতে পারেন। একালে এর একটা অনুবাদ আমি করিয়েছি যদিও করানোর পরে আমি দেখতে সময় দিতে পারি নাই। সেটা পাবলিক করে দেয়া যায় কী করে তা চিন্তা করছি। ঐ বইয়ে আকর্ষণীয় দিক হল – হিন্দু মেলা – এই বলে একটা চ্যাপ্টার। এক কথায় হিন্দুত্ববাদ জন্ম ও ত্তৈরি হচ্ছে কী করে এবইয়ের পরতে পরতে এর দলিল পাওয়া যাবে। তবে আমার পাঠকদের প্রতি আমার বিশেষ অনুরোধ বইটা হিন্দুরা কত খারাপ এভাবে একেবারেই দেখা যাবে না। জমিদার-হিন্দু বনাম পুর্ববঙ্গের বাসিন্দাদের জমিদারি উচ্ছেদের লড়াই য়ার এতে আমাদের বিজয়ের লড়াই -এটা সবসময় মনে রেখে পড়বেন, এটা হিন্দু-মুসলমানের লড়াই নয়।

একারণাই অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সম্পর্কে বলেছি তিনি আমাদেরকে আলোকিত করার নামে হিন্দুত্ববাদের প্রকল্পে ডুবে আমাদেরকেও ডুবাতে চেয়েছেন। হাসিনার প্রকল্পের সাথে মিলিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনের সাথে জড়িয়ে ইসলাম কোপানো আর ঘৃণা ছড়ানোর কাজে লিপ্ত হয়েছিলেন।

এই হল, আলোকিত! এদেরকে যেখানেই এই শব্দে কাউকে দেখবেন বুঝবেন এরা হাসিনাকে পুনর্বাসনের দালাল, মানে ভারতের দালালটা ‘আলোকিত” এই অজুহাতের আড়ালে আবার উঠে দাড়াতে চাইছে!
খুব সংক্ষেপে একটু কথা বলি। লক্ষ্য করেছি এমন আলোচনায় সবসময় “আলোকিত” শব্দটা আসে। কিন্তু প্রায় কেউই এই শব্দের দিকে মনোযোগ দেয় না। অথচ এটাই সবচেয়ে অসৎ আর ইসলামবিদ্বেষী শব্দ, জমিদার হিন্দুর প্রতিপত্যি, দখল, প্রভাব টিকিয়ে রাখার খায়েসের শব্দ।

আলোকিত শব্দটা ইংরাজি enlightenment শব্দটার কলকাতায় করে নেয়া বাংলা। enlightenment এর আক্ষরিক বাংলা হতে পারে “আলো এনে নেওয়া” এধরণের। en-যুক্ত করা হয় কোন নাউন(noun) কে verb হিসাবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে। তাই enlightenment খুব কোন কঠিন ইংরাজি না।

এখন আসেন শব্দটার পিছনের আইডিয়া বা দর্শনটা কী?
এটা আসলে সেকালের রোমে-ফ্লোরেন্সে মোটামুটি ১৪০০ বছরের কালে একটা সামাজিক আন্দোলন (রেনেসাঁ আন্দোলন) শুরু হয়েছিল, সেখান থেকে শুরুর একটা কথা। সেকালের রোমের সম্রাট সহ দেশবাসি ৩১৩ খ্রীষ্টাব্দে সকলেই খ্রীশ্চান হয়ে যায়। কিন্তু এই ১৪০০ খ্রী. বা সালের দিকে এসে তাদের মধ্যে শিল্পকলার লোকেদের অনুভব হয় যে তারা ৩১৩ সালে যত কিছু জানত তা থেকেও এখন পিছনে পরে আছে। এখানে থেকেই রেনেসাঁ আন্দোলনের শুরু; রেনেসাঁর বাংলা করলে হয় নব-জাগরণ। বা ফেলে আসা জিনিষের প্রতি পুনরায় গুরুত্ব দিয়ে দেখা বা আবিস্কার।

এই আন্দোলন সারা ইউরোপ ছড়য়ে পড়তে এক-দেড়শ ছর সময় নিয়েছিল। যেমন ১৪৯৯ সালে এটা ফ্রান্সে হাজির হয় – এরাসমুস প্রমুখের হাতে।

কিন্তু রোএ আবার এটা ধর্মীয় আইনে (খ্রীশচানিটিকে অবমাননা আইন) সক্রিয় করলে এই রেনেসাঁ ঝিমিয়ে পরলেও; তা আশ্রয় পায় একাদেমিক স্তরে – কলেজ-বিশ্বব্যদ্যালয় ধরনের চর্চায়। কিন্তু তখন এর নাম বদলে হয়েছিল বা নিয়েছিল এই enlightenment,। এরপরে ফরাসী দার্শনিক ইম্মানুয়েল কান্ট Kant এর লেখা “What is Enlightenment?” – সবচেয়ে প্রভাবশালী।

তত্ব আগে না প্রয়োগ-বাস্তবায়ন আগে এই তর্কে দুপক্ষেরই লোক পাওয়া যাবে। আগে প্রয়োগ রূপ হাজির হয় আর পরে তা কোন দার্শনিক ঠিক দেখতে পেয়ে পরে একে তত্ব রূপে হাজির করলে সেটা কেমন হবে এর সম্ভবত সবচেয়ে ভাল উদাহরণ হল কান্টের Enlightenment কী এনিয়ে লেখা। কেবল সাবধান করে দেই Enlightenment – এর চিন্তা পদ্ধতি দিয়ে কোন ধর্মতত্ব ব্যাখ্যা দূরে থাক দাঁত বসানোও যাবে না। তবে বিজ্ঞানের (লজিক্যাল ও র‍্যাশনাল চিন্তার) বিস্তারের জন্য ওর ভুমিকা অপরিসীম।
সেদিকে আর এখন বেশী যাচ্ছি না।

লেখকঃ
রাজনৈতিক বিশ্লেষক, goutamdas1958@hotmail.com

Advertisements