যে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে উচ্ছ্বাসের জোয়ারে সেই আয়োজনের অর্জন নিয়ে ভাবনার সুযোগ আমাদের তৈরি হওয়ার নজির খুবই কম। বরং প্রচুর উচ্ছ্বাস যে তৈরি হচ্ছে-এটাই যেন সফলতা। এটাই যেন অর্জন হয়ে ধরা দেয়।
আমার ধারণা, বিষয়টি আমার মতো আরও অনেকেরই চোখে পড়েছে। বাংলাদেশের বইমেলার অনেক অর্জন কেবল উচ্ছ্বাসের প্রাবল্যে এসে মিলিয়ে যায়। বইমেলা নিয়ে উচ্ছ্বাসটা প্রকাশক বা ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা প্রকাশ করলে সেটি কম দৃষ্টিকটু হওয়ার কথা। কিন্তু লেখক ও সংস্কৃতিজীবিরা যখন উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন, তখন আমাদের জাতিগত দুর্ভাগ্যকে এড়িয়ে যাওয়ার পথ আর খোলা থাকে না। অনেক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা যাবে। অনেক অর্জন নিয়েও কথা বলা যায়। কিন্তু ওই যে বাড়তি উচ্ছ্বাস, দেখানোপনা, কথায় কথায় আত্মশ্লাঘা অনুভব করা-এসবের সঙ্গে রাজনৈতিক সচেনতনার বদলে, চিরায়ত বাঙালি স্বভাবের দলাদলির কারণে, বইমেলা যতটা অর্জন নিজের ঝুলিতে রাখার কথা তা খুঁজতে গেলে খালি ঝুলিই ঝনঝন করে বাজতেছে মনে হয়। আমরা খুব রাজনৈতিক সচেতন জাতি, এমন মিথ্যা কথা শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। কিন্তু সত্য হলো, আমাদের খাসিলতে দলাদলি ও ক্ষুদ্রস্বার্থদৃষ্টি এত মজবুত স্থান দখল করে আছে যে, বলতে হবে আমরা মোটেও রাজনীতি সচেতন নই, আমরা অতিমাত্রায় দল সচেতন জাতি মানে দলান্ধ। এবং এ প্রবণতাকে স্বাভাবিক করতে আমরা আবেগী ঐতিহ্য চেতনাকে ঢাল হিসাবে ব্যবহারে খুবই ওস্তাদ।
বইমেলার অনেক সমস্যার মধ্যে অন্যতম একটা সমস্যা হলো এটার রাজনৈতিক (পড়ুন দলীয়) ‘চেতনাগত’ সমস্যা। মানে এটাকে দলীয় গন্ধমুক্ত রাখতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। একটি জাতীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতির সাবালকত্ব অর্জনের একটা নজির হলো তা দলীয় খুপরি পেরিয়ে রাজনৈতিকভাবে বহুস্বরের সম্মিলনের, সংলাপের, বাহাসের পরিসর তৈরি করতে পারে। তাতে সমাজের মধ্যে চিন্তা ও ধারণার নতুনত্ব নিয়ে চর্চার সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু একাট্টা দলীয় ফিতায় সবকিছু দেখা হলে সেই সমাজকে বিকাশমান সমাজ বলা যাবে না। চিরাচরিত শব্দ ব্যবহার করে এটি বলা যায়-ক্ষয়িষ্ণু সমাজ।
বইমেলা নিয়ে বাংলা একাডেমির প্রয়াত মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ‘বই ও বইমেলা’ নামে একটা নিবন্ধ লিখেছিলেন কয়েক বছর আগে। সেখান থেকে একটা অংশ আগে পড়ে নেওয়া যায়।
‘বাংলা একাডেমির বইমেলাটি ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের মানুষের গভীর আবেগ, ভালোবাসা ও গ্রন্থপ্রীতিযুক্ত হয়ে মেলাটি ধীরে ধীরে বাঙালির সাংস্কৃতিক জাগরণ আর রুচি নির্মাণের এক অনন্য প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। আমাদের এ বইমেলাটি অন্য কোনো বইমেলার মতো নয়, একেবারেই বাঙালির ভাষাপ্রীতি, ভাষার জন্য সংগ্রাম ও রাষ্ট্রভাষা হিসাবে মাতৃভাষার প্রতিষ্ঠার স্মারক হিসেবে চিহ্নিত।’
বইমেলাকে কেন্দ্র করে যতই উৎসব-উত্তেজনা, সাংস্কৃতিক জাগরণ এসব দেখানো হোক না কেন, আমার কাছে-সাংস্কৃতিক বিচ্ছিন্নতাও প্রকটভাবে চোখে পড়ে। হাজার বছরের সাংস্কৃতিক অহং প্রকাশের জন্য মাসব্যাপী বইমেলার যে আয়োজন তা সমাজের ‘ভিন্ন’ চিন্তা ও রুচির মানুষকে একীভূত করতে পারেনি, বরং বিচ্ছিন্নতাকে উসকে দিতে সাহায্য করছে। খান যেমন বললেন, এটি হলো সাংস্কৃতিক জাগরণের আর রুচি নির্মাণের কসরত। মেলা তো বেচাকেনার জায়গা, রুচির পরীক্ষা কেন এখানে? এখন কথা হলো, সবার রুচি তো ভাই বাঙালিপনা দিয়ে মাপলে হবে না? আরও নানান রুচির মানুষ তো দেশে আছেন। সেটার হিসাবে থাকে না কেন? এমনকি এনজিওবাজ বুদ্ধিজীবীরাও এটি নিয়ে কথা বলেন না। বিদেশি ফান্ডখোর লোকজন সবসময় ভিন্ন সংস্কৃতির কথা বললেও বইমেলার একটা একাট্টা চরিত্র তৈরি হলো, এখানে যে ভিন্ন সংস্কৃতি, বিশ্বাস ও আদর্শকে শত্রু মনে করা হয় বা কখনো গণনায়ই ধরা হয় না, এ বিষয়ে কোনো দিন কথা বলতে শুনলাম না।
সম্প্রতি ‘আদর্শ’ নামের একটি বাণিজ্যমুখী প্রকাশনীকে বইমেলাতে স্টল না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের অপরাধ এরা নাকি ভিন্ন চিন্তার বই প্রকাশ করেন। অথচ এ ভিন্ন চিন্তার বই নিয়ে রাষ্ট্রীয় আইনে কোনো সমস্যা হয়নি। এখন কথা হলো-এ ধরনের সিদ্ধান্ত যে বা যারা নেন, তারা কী এ সমাজের সবধরনের বিকাশের পথকে কঠিন করে তুলেন না? ভিন্ন চিন্তার বই প্রকাশ তো প্রশংসনীয় কাজ। এর জন্য তো পুরস্কার পাওয়ার কথা মোনাফাকামী প্রকাশনীরগুলোর। সেখানে ঘোষণা দিয়ে তাদের বিষয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সমাজে বিতর্ক ও বিভক্তি তৈরি করে বইমেলা আসলে কী অর্জন করতে চায় আমি জানি না।
লেখক ও স্বাধীনতা প্রিয় নাগরিকদের পাশাপাশি অন্য প্রকাশকদের তো এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা। কিন্তু সেটা তো দেখা যাচ্ছে না। ফলে দিন দিন ভিন্ন চিন্তা ও আদর্শের লোকজনের মধ্যেও হীনমন্যতা বা ভয়ে কুঁকড়ে যাওয়ার দশা তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে বড় কথা হলো, বইমেলাকে এরা বাঙালি সংস্কৃতির দায়ভার দিয়েই বা কী করতে চান? আমি বলতে চাই, একটা মেলা করে সংস্কৃতি রক্ষা করতে হইলে, সেই সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাওয়াই ভালো। এত কমজোর সংস্কৃতি দিয়ে এ গুগল দুনিয়ার প্রতিযোগিতার দিনে সুবিধা হবে না। বহুস্বর যে সংস্কৃতি ধারণ করতে পারে না, সে কেমন সংস্কৃতি? সেটার মতো ক্ষতির জিনিস খুব কমই আছে। কাজেই তার দ্রুত সমাধান সমাজের স্বাস্থ্যের জন্যই ভালো। এক ঘরোয়া আড্ডায় বিখ্যাত সমাজচিন্তক আশিস নন্দী এ লেখককে বলেছিলেন, সংস্কৃতি হলো সালাদের গামলার মতো। অনেক পদ না থাকলে সালাদ যেমন হয় না, তেমনি ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা ও রচির সহাবস্থান ছাড়া সংস্কৃতি হয় না।
বইমেলাকে বই প্রকাশ ও ব্যবসার দিক থেকে না দেখে দলীয় চেতনার দিক থেকে দেখার আরেকটা সমস্যা হলো, যারা এ চেতনার বাইরে অবস্থান করতে চান, তাদের জন্য কোনো স্পেস থাকে না। এটিও আমার আসল কথা না। আসল কথা হলো, বইমেলার এ ‘চেতনাগত’ উন্মাদনা আমাদের অশিক্ষিত মানসিকতার ভেতর একটা ফাঁকা অহং এর জন্ম দিয়ে যাচ্ছে। বই বিষয়ে আমাদের যত্ন, সততা, নিষ্ঠা কোন স্তরের তা পাঠ্যবই নিয়ে এবারের বিতর্ক ও লজ্জাজনক চুরির নজির দেখে আশা করি এখন পরিষ্কার হয়েছে।
ফলে বইমেলা জ্ঞান ও সৃজনের সমৃদ্ধির চেয়ে আমাদের দেশে ‘সাহিত্যিক ফ্যানাটিসিজম’ ছড়ানোর একটা আয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন প্রকৃত লেখকের জন্য মেলার ওপর নির্ভরশীলতার কোনো দরকার থাকে না। কিন্তু মেলা আসলে আমরা চারপাশে একশ্রেণির লেখকদের উৎপাত দেখে বিরক্ত হই। সবকিছুর মতো বই বের করাও একটা হুজুগ হিসাবে চেপে বসে একশ্রেণির মানুষের ঘাড়ে। এবং তার সঙ্গে মতাদর্শের কোনো সম্পর্ক নেই। যে কোনো অবস্থার ভেতর থেকেই খ্যাতির কাঙালপনার যে প্রদর্শনী আমরা এ সময় দেখি, সেটাই বইমেলার সাহিত্যিক ফ্যানাটিসিজম, যার বাংলা করেছি-হুজুগেপনা।
একটু ব্যাখ্যা করে বলি, বই যদি জ্ঞানের বাহন হয়; তাহলে এ জ্ঞানের আবির্ভাব নিজেই একটা বড় ঘটনা বা ইভেন্ট। এর জন্য আলাদা কোনো জাতীয়, দলীয় বা রাজনৈতিক ইভেন্ট দরকার নেই। ফলে একটা বই যদি বের হয়, সেটাই একটা ঘটনা হওয়ার কথা পাঠকদের জন্য। সেটাই পাঠক বা জ্ঞান সাধকদের জন্য বড় ইভেন্ট। আর এ ধরনের ইভেন্ট যে কোনো সময়ই ঘটতে পারে। লেখক যে কোনো সময় ইন্টারভেন বা চিন্তাশীল কাজ করতে পারেন। সারা দেশের বই বাজার ও রিডিং-সংস্কৃতি মজবুত থাকলে প্রকাশকের বই বিক্রি নিয়ে বাড়তি টেনশনের দরকারও পড়বে না। কিন্তু এখন হয় কী, শখের লেখক থেকে শুরু করে সবার বই একটা বাড়তি উত্তেজনার ভেতর হাজির হয়, তখন বইটির আর নিজের পক্ষে একটা ঘটনা হয়ে ওঠার সুযোগ থাকে না। ফলে হুজুগে প্রচুর বই বের করা ও সারা বছর বাদ রেখে এক মাস জুয়ার আসরের মতো বিজি থাকে প্রকাশকরা। এতে পাঠক বেশ সিজনাল হয়ে যাচ্ছে। সারা বছর বইয়ের কোনো খবর না থাকলেও, মেলার সময় বৈধ-অবৈধ বন্ধু-বান্ধবী নিয়ে হল্লা করা ও পরিবেশকে ধুলাময় করতে সাহায্য করার জন্য এরা খুব অ্যাক্টিভ থাকেন। কিন্তু আয়োজক/প্রকাশদের আবার আছে খামাখা ভিড়ের প্রতি লোভ। কিন্তু যারা আসেন তারা তো খুব বই কিনেন। ফলে এ বই বিক্রির অসুস্থ প্রতিযোগিতা আমাদের বইয়ের বাজার ও পাঠকসংস্কৃতি তৈরিতে একটা বাধা হিসাবে হাজির হয়েছে। আর এখন তো যে কোনো অনুষ্ঠান ও দিবসকে আমরা ভ্যালেনটাই দিবস বানিয়ে ফেলতে শিখে গেছি। বইমেলাতেও এটার আছড় পড়েছে।
মনে রাখতে হবে, মূর্খতা কোনো পাপ নয়। কিন্তু মূর্খতার অহং হলো-ক্রাইম। কিসের ভাষাপ্রেম? বাংলাদেশে তো কোনো ভাষাপ্রেম নেই। আছে ‘বর্ণমালা পূজার সংস্কৃতি’। ভাষাপ্রেম থাকলে তো আমাদের বাচ্চারা অন্তত দুই-তিনটা ভাষা জানত। অন্যগুলো বাদ দিলাম, আরবি ও ইংরেজি তো অবশ্যই অল্প বয়সেই শিখে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাভাষাটাও যে ভালোভাবে পারে তারও তো নজির নেই। আছে কেবল কুৎসিত বর্ণমালা প্রেম। এটা ভাষাপ্রেম নয়।
আমাদের দেশে ভাষা নিয়ে গভীর চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়নি। আছে প্যাঁচপ্যাঁচা ইমোশনের চর্চা। এটি দিয়ে কোনো কাজের কাজ হয় না। ভাষার সঙ্গে আত্মপরিচয়, সত্তার একটা সম্পর্ক থাকে। থাকে বিশ্বাস ও ক্ষমতার রাজনীতির সরাসরি সম্পর্ক। সাহিত্য-সংস্কৃতিও রাজনৈতিক-এটি নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু এ ধরনের একটি আয়োজনের যে রাজনীতি তা জাতি হিসাবে আমাদের পিছিয়ে দিচ্ছে।
তাই বলে আমি বইমেলা আয়োজনের বিরুদ্ধে বলছি না। বইমেলা হতেই পারে। কিন্তু এটার উদ্দেশ্য হবে, লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের জন্য বেশি বেশি সুযোগ তৈরি করা। লেখকদের বড় বড় কাজের বিষয়ে চুক্তি হবে। নতুন নতুন লেখকদের বই বের করার একটা পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া চালু হবে। দেশি-বিদেশি লেখকরা ঘুরবেন, কথা বলবেন। একটা এমবিশাস বই লেখার জন্য লেখকরা খ্যাপা হয়ে উঠবেন। তার বইটাই একটা ঘটনা আকারে হাজির হবে এমন স্বপ্ন নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। এবং বছরের যে কোনো সময় বই বের হতে পারে। যে কোনো জায়গা থেকে পাঠক বই পেতে পারেন। অনলাইন বা অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠান এখনো বাংলাদেশের বাংলা বই বিক্রিতে আগ্রহী নয়। এ অবস্থা কীভাবে কাটিয়ে উঠতে পারা সম্ভব। বিশ্ববাজারে বাংলা বই এখনো কেন হাজির নেই-সেসব বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে।
এখনো কেন একটি বিশেষ শ্রেণির সংস্কৃতিই মূলধারা হিসাবে ধরা হবে? রিপ্রেজেন্ট করা হবে? এর বাইরে যারা আছেন, যারা সমাজের সব দল, মত ও ভিন্ন চিন্তা-রুচির মানুষের সহঅবস্থান চান। এবং বাংলাদেশকে বিশ্ববাজারে সব অর্থেই মাথা উঁচু দেখতে চান, তাদের কেন বাইরে রাখা হবে?
আমি মনে করি, বই এ ধরনের মেলাতেই আনতে হবে এমন কোনো কথা নয়। বরং এ মেলাতে মূল ফোকাস থাকে একটি দলীয় আবেগকে সাহিত্যিক রূপ দেওয়ার বহুমুখিন চর্চার দিকে। ফলে বইয়ের দিকে ফোকাস করার আর কোনো ইচ্ছা থাকে না। এরা মনে করে, বায়ান্নর ইতিহাস নিয়ে গর্ব করলেই বাংলাসাহিত্য দুনিয়ার সবাইকে ছাড়িয়ে যাবে। এবং ইতিহাসের কোনো ক্রিটিক করা যাবে না, নতুন চিন্তা করা যাবে না-এটি আইন দিয়ে যারা বন্ধ করতে চায় বুঝতে হবে, ওর কোনো ইতিহাস নেই। সবই ক্ষমতার ফন্দিফিকির।
তবে মনে রাখতে হবে, নতুন চিন্তার আগুন কিন্তু জ্বালাতে হবে। নইলে অনিয়ম ও চূড়ান্ত সর্বনাশা পথই ডিজিটাল চালাকি ও দলীয় চেতনার নামে আমাদের ওপর চেপে বসবে; যা আমাদের জীবনের জন্য, বেঁচে থাকার জন্য অপমানজনক। স্বাধীনতার বোধ আত্মসম্মানের সঙ্গে সম্পর্কিত। যে কোনো মহান অনুষ্ঠানের নামে পরাধীন ও আত্মসম্মানহীন মানুষের উচ্ছ্বাস অশ্লীল।