মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকের অভিনেতা,বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান দিলু মারা গেছেন।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন ছেলে অয়ন রহমান।
ফেইসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “আমার ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা, কীর্তিমান মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেতা মুজিবুর রহমান দিলু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আজ সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে অসীমের যাত্রী হয়েছেন।
“সে জীবন যুদ্ধে যেমন ছিল এক পরাক্রান্ত সৈনিক, তেমনি ছিল এক বর্ণিল জীবনের অধিকারী। তার আত্মার চির শান্তি কামনাই দেশবাসীদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা।”
জানুয়ারির শুরুর দিকে ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে উত্তরার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন ৬৯ বছর বয়সী মুজিবুর রহমান দিলু। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
২০০৫ সালে গুলেন বারি সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন কোমায় ছিলেন দিলু। পরে তিনি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপন শুরু করেন।
দিলুর অভিনয় শুরু মঞ্চ থেকে। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী হন। ১৯৭৬ সাল থেকে টেলিভিশনে নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন।
বিটিভির কালজয়ী ধারাবাহিক নাটক সংশপ্তক এর মালু চরিত্রে অভিনয় মুজিবুর রহমান দিলুকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়।
মঞ্চে তিনি কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। ‘আমি গাধা বলছি’, ‘নানা রঙ্গের দিনগুলি’, ‘জনতার রঙ্গশালা’, ‘নীল পানিয়া’, ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘ওমা কী তামাশা’ তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য মঞ্চনাটক।
১৯৫২ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন অভিনেতা মুজিবুর রহমান দিলু। পেশাগত জীবনে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন তিনি। শিশুদের সংগঠন টুনটুনির সমন্বয়ক ছিলেন তিনি।
স্ত্রী রানী রহমান, দুই ছেলে অয়ন রহমান, অতুল রহমান ও এক মেয়ে তানজিলা মুজিবকে নিয়ে ঢাকার উত্তরায় তিনি থাকতেন।
দিলুর ভাগ্নি কিযী তাহনিন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার জোহরের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে তার মামার জানাজা হবে। পরে বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রাখা হবে তার মরদেহ।
সেখানে নাট্যাঙ্গনের কলাকুশলীরা তাদের এই প্রয়াত সহকর্মীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। আসরের পর বনানী কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে অভিনেতা মুজিবুর রহমান দিলুকে।