আজ থেকে ১০ লক্ষ বছর আগের পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াত তারা। বরফে ঢাকা সাইবেরিয়ার বাসিন্দা সেই ম্যামথদের (Mammoth) দাঁত, শুঁড় কিন্তু আজও রয়ে গিয়েছে পৃথিবীতে। তুষারাচ্ছন্ন এলাকায় পাকাপাকিভাবে সংরক্ষিত হয়ে রয়েছে সেগুলি। এবার তেমনই দু’টি প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীটির দাঁত থেকে ডিএনএ (DNA) বের করে আনলেন গবেষকরা। গড়লেন নয়া কীর্তি। এত পুরনো কোনও দেহাবশেষ থেকে ডিএনএ বের করা সম্ভব হয়নি এর আগে।
এতদিন সবচেয়ে পুরনো ডিএনএ’র বয়স ছিল ৫ লক্ষ ৬০ হাজার বছর থেকে ৭ লক্ষ ৮০ হাজার বছরের মধ্যে। সেই রেকর্ড ভেঙে এবার তৈরি হল নয়া নজির। তাঁদের বিবৃতিতে গবেষকরা জানিয়েছেন, যে দু’টি ম্যামথের দাঁত থেকে ডিএনএ পাওয়া গিয়েছে তারা প্রজাতিগত ভাবে আলাদা। তার মধ্যে একটি প্রজাতি গবেষক মহলে বেশ পরিচিত ‘উলি ম্যামথ’ নামে। অন্যটি ততটা পরিচিত নয়। এই প্রজাতির ম্যামথরা আজ থেকে ১২ লক্ষ বছর আগেও ছিল পৃথিবীতে। প্রায় ৪ লক্ষ বছর আগে এই দুই প্রজাতির মিলনেই উদ্ভব ঘটে কলম্বিয়ার ম্যামথদের, যাদের উত্তর আমেরিকায় পাওয়া যেত।
তবে যে দাঁত থেকে ডিএনএ বের করেছেন গবেষকরা সেটি অবশ্য আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগেই আবিষ্কৃত। ১৯৭০ সালে রাশিয়ার এক গবেষক এটি আবিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু তখন বোঝা যায়নি ওই দাঁতের বয়স কত। বিবর্তনের ধারাকে ভাল করে বুঝতে হলে এই ধরনের প্রাচীন ডিএনএ’র বিশ্লেষণ খুব জরুরি বলে মনে করছেন গবেষকরা।
এত পুরো দেহাবশেষ থেকে যে ডিএনএ উদ্ধার করা সম্ভব, তা নিয়ে সন্দিগ্ধ ছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবারের সাফল্যের পরে আশা বেড়েছে তাঁদের। আপাতত তাঁদের লক্ষ্য, আগামী দিনে এর চেয়েও পুরনো ডিএনএ নিয়ে কাজ করার। যত প্রাচীন ডিএনএ বিশ্লেষণ করা সম্ভব হবে, তত বিবর্তনের ধারাকে আরও ভাল করে বুঝতে পারা সম্ভব হবে।
সূত্রঃ সংবাদ প্রতিদিন