![তুরস্কে সরকারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা কমেছে: জরিপ তুরস্কে সরকারের](https://i0.wp.com/bhawalbarta.com/wp-content/uploads/2022/12/তুরস্কে-সরকারের-তিনটি-গুরুত্বপূর্ণ-প্রতিষ্ঠানের-প্রতি-জনগণের-আস্থা-কমেছে.jpg?fit=900%2C489&ssl=1)
তুরস্কে সর্বশেষ নতুন জরিপগুলোতে দেখা গেছে যে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও সংসদের প্রতি তুর্কি জনগণের মধ্যে ব্যাপক অনাস্থা ও অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে এএসএএল (ASAL) গবেষণা ইনস্টিটিউট ‘অসাল’ সম্প্রতি তুরস্কের ২৬টি প্রদেশে ২৭০০ জনের ওপর জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদেরকে প্রশ্ন করা হয় কোন্ সরকারি প্রতিষ্ঠানকে আপনি অন্যদের চেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য মনে করেন? মাত্র পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশেরও কম সংখ্যক মানুষ প্রেসিডেন্টের প্রতি তাদের আস্থার কথা জানিয়েছেন। এই জরিপে মাত্র ছয় শতাংশ মানুষ সংসদের প্রতি এবং পাঁচ দশমিক চার শতাংশ মানুষ বিচার বিভাগের প্রতি আস্থার কথা জানিয়েছে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের বিরাট অংশ এই তিন বিভাগের প্রতি তাদের অনাস্থার কথাই জানিয়েছে। তবে এই জরিপের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বিভাগগুলোর তুলনায় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন বিভাগের প্রতি তুলনামূলক বেশি আস্থার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। উদাহরণ স্বরূপ, সেনাবাহিনীর প্রতি ১৭ শতাংশ, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রতি ১৪ শতাংশ, পুলিশের প্রতি ১৩.৫ শতাংশ এবং ১৩ শতাংশেরও কম তুর্কি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা পরিষেবার পক্ষে রায় দিয়েছে জরিপে অংশগ্রহণকারীরা।
তবে জরিপের এই ফলাফল সত্বেও একটি বাস্তবতাকে উপেক্ষা করা উচিত হবে না। আর তা হচ্ছে, ক্ষমতাসীন “জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি” (একেপি) এবং তার মিত্র, “রিপাবলিকান” জোটের “ন্যাশনাল মুভমেন্ট” দলের কাছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট রয়েছে যা বিরোধী দলগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, রজব তাইয়্যেব এরদোগান সরকারের ভুল নীতির বাস্তবায়ন, বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি এবং বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে তুরস্ককে খুব খারাপ পরিস্থিতিতে ফেলেছে। নিঃসন্দেহে, একটি অনিয়ন্ত্রিত অর্থনৈতিক সংকটের উত্থান এবং তুর্কি জনগণের অর্থনৈতিক সংকট ও জীবনমানের নিম্নগতি প্রভৃতি সমস্যার দায় তুরস্কের ক্ষমতাসীন দল এবং খোদ রজব তাইয়্যেব এরদোগানের ওপরই বর্তায়।
এদিকে, পিকেকে গেরিলাদের দমনের অজুহাতে ইরাক ও সিরিয়ায় তুরস্কের সামরিক অভিযানকে সেদেশের জনগণ ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা মোটেই ভালোভাবে নেয়নি। কেননা সরকারের এ পদক্ষেপের ফলে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি নানা ইস্যুতে এরদোগান সরকারের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার সাথে উত্তেজনা সৃষ্টির পাশাপাশি আরব মিত্রদের সাথেও বিবাদে জড়িয়েছে সরকার। এ ছাড়া ইসরাইলের সাথে এরদোগান সরকারের ঘনিষ্ঠতাকেও সেদেশের জনগণ ভালোভাবে নিচ্ছে না। এ অবস্থায় আগামী বছর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের অবস্থা কোন দিকে যায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।